আছাদুজ্জামান খন্দকার, কিশোরগঞ্জ:
নিজ বাড়ি থেকে স্কুলে গিয়েছিল মিলি আক্তার (১৪)। আর বাড়ি ফেরেনি। এ ঘটনায় মেয়ের কোন সন্ধান করতে না পেরে কিশোরগঞ্জ আদালতে একটি মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। অবশেষে দীর্ঘ সাড়ে চার মাস পর ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার গভীর রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাধখোলা গ্রাম থেকে অপহৃত স্কুল ছাত্রী মিলি আক্তারকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া থানার এসআই নাজিমুদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। এ সময় একই স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অপহরণকারি মোস্তাকিমকে (২২)।
পরে রাতেই পুলিশ ভিকটিম ও অপহরণকারিকে পাকুন্দিয়া থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। অপহৃত স্কুল ছাত্রী মিলি আক্তার কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের চরকাওনা (উত্তর পাড়া) গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে।
তিনি স্থানীয় চরকাওনা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। গ্রেপ্তার মোস্তাকিম ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের ফতুয়াদী গ্রামের স্বপন মিস্ত্রির ছেলে।
ভিকটিমের বাবা আবুল হোসেন জানান, গত ৬ মার্চ সকালে বাড়ি থেকে স্কুলে যায় মিলি আক্তার। বিকেলে স্কুল ছুটির পর বাড়িতে যাওয়ার সময় একটি ফাঁকা জায়গায় পৌঁছলে মোস্তাকিমের নেতৃত্বে চার-পাঁচজন অপহরণকারী জোর করে তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়।অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও তার সন্ধান পায়নি স্বজনরা।
পরে মোস্তাকিমকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল নং-২ এ তার মা বাদী হয়ে একটি অপহরণের মামলা করেন। পরে আদালতের নির্দেশে ১৪ই এপ্রিল পাকুন্দিয়া থানায় মামলাটি রুজু করা হয়। মামলা নম্বর-১৪।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পাকুন্দিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজিমুদ্দিন বলেন, মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার পর অভিযুক্ত প্রধান আসামি মোস্তাকিমের মুঠোফোনের অবস্থান (ট্র্যাকিং) জানার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
অবস্থান শনাক্ত হওয়ার পর প্রথমে চট্রগ্রাম শহরের একটি বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার এক বন্ধুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার গভীর রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার একটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। এসময় অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ হাসান সুমন বলেন, আজ রোববার ভিকটিমকে আদালতে জবানবন্দির জন্য পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত অপহরণকারীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।