নাজমুল ইসলাম:
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম (উপসচিব, একান্ত সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব ) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী এবং ডাঃ জহিরুল ইসলামদ্বয়কে (উপসচিব যুব-১) অনতিবিলম্বে অপসারনপূর্বক তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করতে জনপ্রশাসন ও মন্ত্রী পরিষদ সচিব বরাবরের দুটি অভিযোগ জমা হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রবিউল ইসলাম ও ডাঃ জহিরুল ইসলাম তারা দীর্ঘদিন এ মন্ত্রণালয় কর্মরত থাকায় এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে আস্থাভাজন কর্মকর্তা থাকায় তারা একচেটিয়া দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রকল্পের এক হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীদের সরকার রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশে উল্লেখ ছিল রাজস্বখাতে স্থানান্তর তারিখে বেতন ভাতাদির সুবিধা পাবে।
কিন্তু উপসচিব রবিউল ইসলাম ও ডাঃ জহিরুল ইসলাম তারা এক হাজার কর্মচারীর নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ গ্রহন করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে মিথ্যা/ভূল আদেশ জারী করেন এবং প্রকল্প সমাপ্ত দিন থেকে আর্থিক সুবিধা পাবে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
তাদের এমন আদেশের ফলে কর্মকর্তা কর্মচারীরা আর্থিক ভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ ও মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরেছেন। কর্মচারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে হলেও উক্ত দুই কর্মকতাকে বরখাস্ত করে শাস্তির আওতায় আনা জরুরী প্রয়োজন মনে করেন অভিযোগগন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক/কো-অর্ডিনেটরসহ সকল প্রথম শ্রেণির বদলী সংস্থার প্রধান হিসেবে মহাপরিচালক এর প্রস্তাব ব্যতিরেখেই উপসচিব ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে রবিউল ইসলাম ও ডাঃ জহিরুল ইসলাম বদলী বানিজ্য করেন।
কারো বাবার/মায়ের অসুখ, কারো পারিবারিক অসুবিধা বিবেচনা না করে তারা শুধু মাত্র আর্থিক মানদন্ডের ভিত্তিতে বদলী বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন এমন কি তৃতীয় শ্রেণির সহকারি উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের এ দুই কর্মকর্তা আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বদলীর বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, এই তৃতীয় শ্রেণির বদলীর এখতিয়ার এক মাত্র মহাপরিচালক, কিন্তু তার ক্ষমতার উপর এই দুই কর্মকর্তার প্রভাব বিস্তার করছে।
উপসচিব রবিউল ইসলাম ও উপসচিব ডাঃ জহিরুল ইসলাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরকে পাশকাটিয়ে প্রানি সম্পদ অধিদপ্তরের সাথে চুক্তি করেন এই বলে প্রানি সম্পদ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ পরিচালনার জন্য রাজশাহী, গোপালগঞ্জ ও বগুড়া যুব প্রশিক্ষণকেন্দ্র কে নির্বাচন করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেন।
দীর্ঘদিন পর তৎকালিন পরিচালক (প্রশিক্ষণ) যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ ব্যহত হচ্ছে বিষয়টি মহাপরিচালকের দৃষ্টিগোচরে আনা হলে প্রানি সম্পদ অধিদপ্তরের সাথে অবৈধ চুক্তি বাতিল করা হয়।
ইতিমধ্যেই (তিন চার বছরের) প্রতি সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার দিন বর্ণিত কেন্দ্রে গমন দেখিয়ে উপসচিব ডাঃ জহিরুল ইসলাম প্রতি সপ্তাহে অবৈধ ভাবে এক লক্ষ টাকা করে ঘুষ নেন।
যুব কল্যানের অর্থ অনুদান হিসেবে যুব সংগঠনকে প্রত্যেক উপজেলায় অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়,মাঠ পর্যায়ে প্রচলিত আছে ডাঃ জহিরুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম সহ অন্যান্যদের প্রতি যুব সংগঠনকে পাঁচ থেকে দশহাজার টাকা করে অগ্রিম ঘুষ প্রদান না করলে অনুদান পাওয়া যায় না, এই অনুদানের টাকায় ঘুষ গ্রহন করে অনেকেই কোটিপতি হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রির নামে শেখ হাসিনা ভলান্টিয়ার পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে, মাঠ পর্যায়ে শোনা যায় উপসচিব রবিউল ইসলাম ও উপসচিব ডাঃ জহিরুল ইসলামকে ঘুষ না দিলে এই সম্মানের পুরস্কার/ অর্থ পাওয়া যায় না, গত বছর ১২ জনকে পুরস্কার দেওয়ার কথা থাকলেও শুধু মাত্র লেনদেন সঠিক ভাবে না হওয়ায় তিনজনকে পুরস্কার করেননি দুই কর্মকর্তা।
রবিউল ইসলাম (উপসচিব) একজন হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে তিনি এখন কোটি কোটি টাকার মালিক তা ছাড়া তিনি একজন জামাত মতাদর্শলোক, তার শ্বশুর নেছারাবাদ উপজেলার জামাতের আমীর।
রবিউল ইসলাম ও ডাঃ জহিরুল ইসলাম সাধারন কৃষকের সন্তান হয়েও একাধিক গাড়ি বাড়ি ফ্লাটের মালিক। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বিভাগীয় কর্মকর্তা পরিচালক, উপপরিচালক অধিকাংশ বিএনপি সক্রিয় কর্মী, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (নন-ক্যাডার) (বিএনপি) ওয়ালিউর রহমান এর সাথে এ সব কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজস রয়েছে।
তাছাড়া উপসচিব রবিউল ইসলাম ও ডাঃ জহিরুল ইসলাম প্রকৃত পক্ষে ক্ষমতাদর্শে বিশ্বাসী সুতরং আমরা যা বলব তাই তারা করবে। ডিজি ওয়ালিউর রহমানের সময়ের কর্মরত কর্মকর্তাদের তালিকা দেখলে সব বেরিয়ে আসবে। খোলস পাল্টানো কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন এবং সরকারের পক্ষের কর্মকর্তাদের স্বীকৃতিদেন এবং দুনীতি বাজ দুই কর্মকর্তাদের যারা পৃষ্ঠপোষকতা করছে তাদেরকেও শাস্তির আওতাভুক্ত করুন।
উপসচিব রবিউল ইসলাম ও ডাঃ জহিরুল ইসলাম এর সহযোগীতায় উপপরিচালক হিসেবে ১৪ কর্মকর্তাকে জ্যেষ্ঠতা তালিকা ও পদোন্নতি নীতি মালা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে।
জানা যায়, প্রত্যেক অবৈধভাবে পদোন্নতি প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিকট থেকে ১০ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহন করেছে এ দুই কর্মকর্তা। পরবর্তীতে এ সকল কর্মকর্তার কর্মস্থলে অবৈধ ভাবে আইবাস অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচীসহ এ অবৈধ ভাবে পদোন্নতি প্রাপ্ত ১৪ জন কর্মকর্তার কার্যালয় বাস্তব বাজেট ও আইবাস++ বরাদ্দ পরীক্ষা করলে সব বের হয়ে আসবে।
কিন্তু বাস্তবে এই সব কর্মকর্তাদের নিজেদের মধ্যে শুধু পারস্পরিক বদলী হওয়ায় এই তথ্য বের হয়ে আসছেনা। বরিবউল ইসলাম ও ডাঃ জহিরুল ইসলাম এর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচীতে দুনীর্তি করে দুদকের আসামি হয়েও তারা সুবিধাজনক স্থানে তাদেরকে রেখেছেন।