সময় খবর ডেস্ক:
জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যতগুলো নির্বাচন হবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সবগুলোতে অংশগ্রহণ করবো। এর দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে- প্রথমত আমাদের নিজস্ব সাংগঠনিক ও নেতৃত্ব মূল্যায়ন করা সঠিক কী অবস্থায় আছে।
আর দ্বিতীয়ত সরকার কী করতে চাচ্ছে তা আমরা যেমন জানতে পারবো, তেমনি দেশবাসীও জানতে পারবে। আমরা কেউ যদি নির্বাচনে এভাবে না আসতাম তাহলে সরকার বলতে পারতো, আসলে সঠিক নির্বাচন দিতাম।
কাজেই ওটাও একটা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছি সরকারকে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে বরিশাল বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
বরিশাল সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর সেনাবাহিনী চাওয়া, ব্যালটে ভোটগ্রহণ ও রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রত্যাহারের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, আমাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছি, তবে তিনি অফিসিয়ালি নমিনেশন পেপার কিনে সাবমিট করে প্রার্থী হননি। তবে প্রার্থী হিসেবে তিনি যেটা দাবি করবেন তা নির্বাচন কমিশনকে বিবেচনা করতে হবে। আমরা সব সময় এটা দেখে আসছি। আমার ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক সময় দেখেছি নির্বাচনের সময় যাকে আমার পছন্দ হয়নি, বললে নির্বাচন কমিশন বদলে দিয়েছে, আর এটি খুব স্বাভাবিক বিষয়।
তিনি বলেন, ইভিএমের ব্যাপারে আমরা বারবার বলেছি, সরকার সব সময় হস্তক্ষেপ করে নির্বাচনকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসে এবং ইভিএম সেটাতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এটা মানুষের মনে একটা ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। এ যে আস্থাহীনতা সরকারের এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে, বিশেষ করে সরকারি যারা কর্মকর্তা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট তারা সরকারি দলের ইচ্ছেমতো প্রার্থীকে বিজয়ী করে দেয় এবং তারা ইভিএমকে সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করে এটা নিয়ে আমরা বারবার বলছি। ইভিএম ভালো খারাপ এটা আমি বলতে চাই না। ইভিএম ভালোমতো করতে পারলে হয়তো ভালো হতে পারতো। কিন্তু ইভিএমের ওপর মানুষের আস্থা নেই। সরকার সত্যিকার অর্থেই ভালো ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চায়, জনগণের আস্থা অর্জন করতে চায়, তাহলে ইভিএমে না করাই ভালো বলে আমরা মনে করি।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আধিপত্যের অভিযোগ তোলার বিষয়ে জি এম কাদের বলেন, এটা নিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলবো। এছাড়া সরকারি দল বা সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখবো। এখানে একটা গুজব আসার আগেই ছড়িয়ে গেছে, এটা নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর আস্থাহীনতার বড় একটি উদাহরণ বলা যেতে পারে। সত্য-মিথ্যার কিছু নেই, কিন্তু গুজব উঠেছে যে সরকার ঠিক করে ফেলেছে কাকে নির্বাচিত করবে এবং সেভাবে কাকে বাদ দেবে। এটা সরকার করছে এবং সরকার ওভাবেই ফলাফল দেবে, এটার হয়তো কোনোটিই সত্যি নয়। তবে মানুষ যে বিশ্বাস করছে এটাই সরকারের ব্যর্থতা।
এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপসসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।