মহিউদ্দিন রানা, নিজস্ব প্রতিবেদক (ময়মনসিংহ):
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের যে কোন লড়াই-সংগ্রাম, আন্দোলনে সর্বাত্মক ঝাপিয়ে পড়ার সংগঠনই হলো ছাত্রদের সর্ববৃহৎ সংগঠন ছাত্রলীগ।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলেও সংগঠনটির কমিটি নেই ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়। কমিটি বিলুপ্তির পাঁচ মাস পার হলেও এখনো পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগ।
এতে দিনদিনই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শুধু তা-ই নয়,দায়সারাভাবে পালন করছে তাদের সাংগঠনিক কর্মসূচি। এ অবস্থায় ছাত্রলীগের কমিটি না হলে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনিত প্রার্থীর ওপর বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
উপজেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুন এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি বিলু্প্ত ঘোষণা করেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ।
সেই সাথে সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাত দিনের মধ্যে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত প্রদানের নির্দেশ প্রদান করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী সাত দিনের মধ্যেই উপজেলা এবং পৌর ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা জেলা ছাত্রলীগের কাছে জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন।
কিন্তু কমিটি অনুমোদন নিয়ে শুরু হয় টালবাহানা। এ অবস্থায় গত ৯ অক্টোবর উপজেলা, পৌর এবং সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ। ওই সভার দেড় মাস পার হলেও এখনো পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াদুল আলম শাহীন বলেন, ‘ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ পূর্বে খুবই সুসংগঠিত ছিল। বর্তমানে কমিটি না থাকায় নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দুর্বল হয়ে যাচ্ছে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। তাছাড়া কমিটি না থাকলে মাঠে যেমন কর্মীও সক্রিয় থাকেনা, তেমনি সাংগঠনিক দায়িত্বও কেউ নিতে চায়না’। কেন্দ্রিয় এবং জেলা ছাত্রলীগের কাছে কমিটি অনুমোদনের জোর দাবি জানান শাহীন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানা আহমেদ বলেন, ‘কমিটি অনুমোদন না হওয়ায় একদিকে যেমন নতুন নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না, অন্যদিকে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও দিনদিনই ভেঙে পড়ছে। নতুন নেতৃত্ব পেলে এ উপজেলায় ছাত্রলীগ ফের উজ্জীবিত হবে’। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ছাত্রলীগের কমিটির দাবি জানান রানা আহমেদ।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ ওয়ালিউল্লাহ রাসেল বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলায় ছাত্রলীগের কমিটি না থাকা মানে এই আসনটিতে দলীয় মনোনিত প্রার্থী এমনিতেই পিছিয়ে রয়েছে। তাই ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করতে এবং আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে অচিরেই কমিটি অনুমোদন প্রয়োজন’।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদুল ইসলাম ভূঁইয়া সুমন বলেন, ‘দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল। সেই উন্নয়নের বার্তা তরুণ প্রজন্ম এবং নতুন ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিতে ছাত্রলীগের বিকল্প নেই।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাফির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পাশে ছাত্রলীগকে অবশ্যই প্রয়োজন। নির্বাচনকে সামনে রেখে সেটা আরও গুরুত্ব বহন করে। নতুন কমিটির অনুমোদনের ক্ষেত্রে জেলা এবং কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ আমাদের সাথে সমন্বয় করলে আমরা একটা মতামত দিব’।
ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আল আমিন বলেন, ‘কমিটি অনুমোদনের বিষয়টা প্রক্রিয়াধীন আছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। তাঁদের নির্দেশনা পেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই কমিটির অনুমোদন দেওয়া হবে।’