মহিউদ্দিন রানা, নিজস্ব প্রতিবেদক (ময়মনসিংহ):
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে মো. সোহেল রানা (২৫) নামে এক যুবককে দা দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশ। সেই সাথে হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি মো. কাজী রায়হানকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ (২৯ অক্টোবর) রোববার ময়মনসিংহ ডিবি কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির ওসি মো. ফারুক হোসেন।
এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের কুর্শিপাড়া এলাকায় কাঁচামাটিয়া নদীর পাড় থেকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এদিকে আজ রোববার গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে নেওয়া হলে সোহেলকে হত্যার দায় স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেন হত্যাকারী মো. কাজী রায়হান।
এসময় আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন ময়মনসিংহ আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ান মনিরুজ্জামান। পরে আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালত পরিদর্শক ঝুটন কুমার বর্মণ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. কাজী রায়হানের দেওয়া বর্ণনা সূত্রে জানা যায়, কয়েকমাস আগে সোহেলের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা ধার নেয় মো. কাজী রায়হান। ফেরত দেওয়ার নির্ধারিত তারিখের পরে ধারের টাকা ফেরত চাইতে গেলে বিভিন্ন রকম টালবাহানা শুরু করে কাজী রায়হান। এই বলে যে, বিয়ে করে যৌতুক নিয়ে ধারের টাকা শোধ করে দিবে। এভাবে কেটে যায় আরও কয়েক মাস।
এ অবস্থায় একমাস আগে বিয়ে করে কাজী রায়হান। কিন্তু সোহেলের টাকা ফেরত দেয়নি। সোহেল টাকা ফেরতের জন্য চাপ সৃষ্টি করলে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করে কাজী রায়হান।
একপর্যায়ে গত শুক্রবার রাতে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে সোহেলকে খবর দিয়ে নিয়ে যায় উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের কুর্শিপাড়া এলাকায় কাঁচামাটিয়া নদীর পাড়ে। সেখানে নিয়ে গিয়ে দা দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে সোহেলকে।
হত্যাকাণ্ডের আসামি কাজী রায়হান এবং হত্যার শিকার সোহেল রানার বাড়ি একই এলাকা ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের কুমড়াশাসন গ্রামে। কাজী রায়হান ওই এলাকার মো. কাজী খোকনের ছেলে এবং হত্যার শিকার সোহেল রানাও একই এলাকার মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে।
উল্লেখ্য, গতকাল (২৮ অক্টোবর) শনিবার সকালে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের কুর্শিপাড়া এলাকায় কাঁচামাটিয়া নদীর পাড় থেকে ক্ষতবিক্ষত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। যুবকের লাশের পাশে পড়ে ছিল তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও একটু দূরে একটি রক্তাক্ত দা পড়ে ছিল।
প্রথমে পরিচয় না মিললেও পরে নিহত যুবকের মানিব্যাগে থাকা একটি বিদ্যুৎ বিল থেকে খোঁজ করলে নিহতের চাচা আবু সিদ্দিক লাশের পরিচয় শনাক্ত করেন।
এ অবস্থায় আবু সিদ্দিক বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে গতকাল রাতে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে হত্যার রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থা। পরে গতকাল রাতেই অভিযান চালিয়ে হত্যার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশ।