‘শ্রমিকদের আন্দোলন ও দাবি যৌক্তিক বলে আমি মনে করি। শ্রমিকরা তাঁদের সঠিক অধিকার না পাওয়ায় কাজ বন্ধ রেখেছে। বুড়িমারী স্থলবন্দরে গঠিত ট্রেড ইউনিয়ন গুলো সঠিকভাবে গঠিত হলে ও কাজ করলে শ্রমিকরা এ আন্দোলন করার কথা নয়’ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর পরির্দশনে এসে এসব কথা বলেন- নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার সন্ধায় স্থলবন্দর পরিদর্শন শেষে বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে মতবিনিময় সভায় তিনি আরও বলেন, ‘কোনো কিছুর সমাধান কাজ বন্ধ (পণ্য ওঠানামা) করে চাইলে হবে না। প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত মনমত না হলে রাজপথ সবার জন্য খোলা আছে।’
এ সময় প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের বুড়িমারী শাখার সভাপতি সাজ্জাদ হোসেনকে ডেকে আগামীকাল থেকে পণ্য ওঠানামার কাজ শুরু করতে বলেন।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী বুড়িমারী স্থলবন্দর পরিদর্শনে আসেন। পরে তিনি জেলা উপজেলা প্রশাসন, স্থলবন্দর, কাস্টমস্ কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক, সরদার ও ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন, লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বুড়িমারী স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি রুহুল আমীন বাবুল, পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলাম, লালমনিরহাটের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) ফরহাদ ইমরুল কায়েস, বুড়িমারী স্থল শুল্ক কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) আব্দুল আলীম, স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন ও পাটগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ প্রমুখ।
ঊল্লেখ্য গত ১২ সেপ্টেম্বর হতে বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ৫ দিন ধরে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রাখে শ্রমিকেরা। সঠিক মজুরী না দেওয়া, পারিশ্রমিকের কেটে নেওয়া টাকার হিসাব না দেওয়া, নির্বাচনের মাধ্যমে শ্রমিক সংগঠনের কমিটি গঠন না করে স্বজনপ্রীতিসহ নানা বৈষম্যের অভিযোগে শ্রমিক সরদারদের বিচার ও পদত্যাগের দাবিতে একাধিকবার এ অসন্তোষের সৃষ্টি হয়।
এ কারণে একাধিকবার বুড়িমারী স্থলবন্দর মহাসড়ক অবরোধ ও ধর্মঘট করে আসছে শ্রমিকরা। গত ১২ সেপ্টেম্বর শ্রমিকদের মজুরীর টাকা না দেওয়া ও সাধারণ শ্রমিকদেরকে কাজের সিরিয়াল দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও সরদার গ্রæপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল মারে। এতে ১৫ জন আহত হয়।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর শ্রমিক অসন্তোষ ও স্থলবন্দরের কার্যক্রমে ব্যাঘাতের ঘটনায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন। কমিটি ও উপজেলা পুলিশ প্রশসান সাধারণ শ্রমিকদেরকে নিয়ে দুই দফা বসলেও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় গত ৫ দিন ধরে অচল হয়ে আছে বুড়িমারী স্থলবন্দর। আগামীকাল থেকে কাজ শুরু/পণ্য ওঠা নামার কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।