২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| ১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৬ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি| সকাল ৯:৫৬| বসন্তকাল|
শিরোনাম:
মনোহরদীতে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগের সভাপতি আটক শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কুরআনের রাজ কায়েম করতে চাই পাটগ্রামে বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় যুব সমাজের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত নান্দাইল উপজেলা নাগরিক ফোরামের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত  নান্দাইলে জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত  নান্দাইলে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মিম্মান সম্পাদক শামীম  মনোহরদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ইফতার ও দোয়া মাহফিল বিনামূল্যে পথচারীদের ইফতার করালেন ‘জনতার ঈশ্বরগঞ্জ’

কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নরসিংদীতে ৫ টি সেতুর সংযোগ রাস্তা নেই

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩,
  • 92 Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রায় ১.৬২ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নরসিংদীর ৩ উপজেলায় ৫ টি সেতু নির্মাণ করা হলেও প্রতিটি সেতুর সংযোগ রাস্তা না থাকায় পারাপার করতে পারছেন না এলাকারবাসী।

ফলে, সরকারের অর্থ ব্যয় হলেও ভোগান্তি কমে নি পথচারীদের। প্রায় অর্ধ যুগ আগে এসব সেতু গুলো নির্মাণ করা হলেও অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। এসব সেতু ব্যবহার করতেও আবার বাশেঁর সাঁকো ব্যবহার করতে হচ্ছে। ফল, কৃষিপণ্যসহ প্রয়োজনীয় মালামাল বহন করতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা।

জানা যায়, সেতু গুলোর একটি অবস্থিত নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী, দুটি একই উপজেলার চরদিঘলদি ইউনিয়নে এবং একটি করে অবস্থিত রায়পুরা উপজেলার আমীরগঞ্জে ও শিবপুর উপজেলার মাছিমপুরে। এদের অধিকাংশ সেতু ৬-৭ বছর আগে স্থাপন করা হয়েছিল।

সরে জমিনে দেখা যায় যে, আলোকবালী ইউনিয়নের কাজিরকান্দি ও বকশালীপুর গ্রামের সংযোগ রক্ষা করতে খালের উপর ৪০ ফুট দৈর্ঘের সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

২০১৫-১৬ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অর্থায়নে ৩০.৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণ করার পর থেকে সেতুটির সংযোগ সেতু না থাকায় চলাচল করতে পারছেন না এলাকাবাসী। পাশাপাশি সেতুরটির ফলকের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে গেছে।

এলাকাবাসী বলছেন, দুটি গ্রামের মাঝে প্রায় ১ কিলোমিটার দৈর্ঘের সড়কও তুলনামূলক কম উচু হওয়ায় পানির নিচে সড়কটি তলিয়ে গেছে। শুকনা মৌশমেও এটি ব্যবহৃত হচ্ছে না। অন্য দিকে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৩৮.৮৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের চরদিঘলদি বাজার রাস্তায় নির্মীত সেতুটির একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

ওই চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন শাহীন বলছেন, একই ইউনিয়নের জিতরামপুর এলাকায় আরেকটি সেতু একই অবস্থায় পড়ে আছে যার নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে আমীরগঞ্জ এলাকায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেটি ৩২.২৭ লক্ষ ব্যায়ে নির্মাণ করা হয়। এ সেতুর মাধ্যমে আমীরগঞ্জ এলাকার আন্ত:যোগাযোগ করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

শিবপুরে আছে মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া এলাকায় বিলের উপরে অবস্থিত সেতুটি একপাশে রাস্তা থাকলেও আরেক পাশে রাস্তা নেই। সেতুটি প্রায় ১৫ বছর আগে ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছে।

এ পাঁচটি সেতু নির্মাণে প্রায় ১.৬২ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। জনগনের করের এসব টাকা ব্যয় হলেও উপকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী। এ পাঁচটি সেতু দিয়ে স্বাভাবিক যোগাযোগ রক্ষা করাবগেলে অন্তত লক্ষাধিক মানুষ উপকারভোগী হবেন।

আলোকবালীর ইউনিয়নের বকশালীপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়া (৪৫) বলেন, “সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল দুটি গ্রামের স্বাভাবিক যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য। কিন্তু বর্ষাকালে সেতুর সংযোগ সড়কে উভয় পাশের রাস্তায় ৪-৫ ফুট পানি। সেতুটি ব্যবহার করতে না পারায় এক কিলোমিটারের রাস্তা ২-৩ কিলোমিটার ঘুরে কাজিরকান্দি ও তার আশের পাশের গ্রাম গুলোতে বিভিন্ন কাজে যেতে হয়। সেতু নির্মাণ করার পর কখনো রাস্তা নির্মাণ করা হয় নি।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের গ্রামটি বিভিন্নভাবে বঞ্চিত। স্কুলের শিক্ষার্থীরা এ রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারলে পাশের দুটি গ্রামে ঘুরে যেতে হতো না, কষ্ট লাঘব হতো। আমরা দ্রুত এ সেতুটির সংযোগ রাস্তা চাই।”

আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট আসাদ উল্লাহ মোল্লা বলেন, “হরিলুটের আয়োজন হিসেবে এসব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। স্থানীয় সরকারের লোকজন ও কিছু আমলা সরকারের পকেট কাটার জন্য এসব কাজ করে থাকেন। আমাদের বকশালীপুর থেকে কাজিরকান্দি এলাকার মাঝে প্রায় ৭ বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করা হলেও কেন সংযোগ রাস্তা নির্মাণ করা হয় নি, তা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি। আমি যতটা জানি, এ রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ এসেছে কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মনে হয় আত্মসাৎ করে ফেলেছে।”

চরদিঘলদি ইউনিয়নের বাসিন্দা সাঈদ আব্দুল্লাহ (৫৫) বলেন, “চরদিঘলদি বাজারের পাশেই সংযোগ রাস্তা ব্যতিত সেতু অবস্থিত। এ সেতুর মাধ্যমে পাশের আরও তিন গ্রামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা যেতো। কিন্তু রাস্তার সংযোগ না থাকায় মালামাল পরিবহনে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের দাবি এ সেতুর সংযোগ রাস্তা স্থাপন করে কষ্ট লাঘব করার দাবি জানাচ্ছি।

রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ শাহাদাৎ ইসলামের (৩২) অভিযোগ সেতুরটির সংযোগ রাস্তা তুলনামূলক নিচু হওয়ায় বর্ষাকালে পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে, এটি জনগণের ব্যবহারের জন্য কোনো কাজে আসছে না।

চরদিঘলদি ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন শাহীন বলেন, “আমাদের এলাকার চরদিঘলদি বাজারের পাশাপাশি জিতরামপুরেও একটি সেতু রয়েছে যার সংযোগ রাস্তা নেই। আমরা এলজিইডিকে সংযোগ সড়ক নির্মাণের অনুরোধ করে চিঠি লিখেছি। আমাদেরকে তারা জানিয়েছেন যে, অচিরেই তারা রাস্তা গুলো নির্মাণ করে দিবেন। আমরা আশাবাদী সমস্যা গুলো অচিরেই সমাধান হয়ে যাবে।”

আলোকবালী ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন সরকার দীপু বলেন, “ইতিপূর্বে সেতুরটির জন্য দু’বার রাস্তা মেরামত করেছি।কিন্তু বর্ষাকালে স্রোতের কারণে ও নৌকার দ্বারা ঘর্ষণের জন্য রাস্তাটি ভেঙ্গে গেছে। এবার পানি কমে যাবার পর রাস্তা আবারও ঠিক করে দেয়া হবে।”

তবে, এলাকাবাসী বলছেন, কখনো রাস্তা মেরামত করা হয় নি, বরং সেতুটি নির্মাণ করে দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছেন।

শিবপুর উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হারিছ রিকাবদার বলেন,” জমির মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতায় আমরা রাস্তাটি মেরামত করতে পারি নি। জমির মালিক রাস্তা দিচ্ছেন না। আমরা চেষ্টা চালিয়েছি বহুবার। তারপরও প্রশাসনের সহায়তা চাইবো যাতে করে এলাকাবাসী এটি ব্যবহার করে সহজে যাতাযাত করতে পারেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরি অন্যান্য নিউজ