নিজস্ব প্রতিবেদক: নরসিংদীর মনোহরদীতে কৌশলে সম্পত্তি লিখে নিয়ে বৃদ্ধ মাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তার বড় মেয়ে খাদিজা আক্তারের বিরুদ্ধে।
খাদিজা আক্তার উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বীরগাঁও গ্রামের প্রবাসী শফিকুল ইসলাম ফালু মিয়ার স্ত্রী।
জানা যায় নির্যাতিত ওই নারীর নাম জমিলা খাতুন।তিনি লেবুতলা ইউনিয়নের মৃত.শামসুদ্দিন মাঝির স্ত্রী। তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে।
শামসুদ্দিন মাঝি মারা যাওয়ার পর ওই নারী স্বামীর কাছ থেকে প্রায় ৬ শতাংশ সম্পত্তি পায়।এছাড়াও ওই নারী তার বাবার বাড়ি থেকেও ওয়ারিশ সুত্রে কিছু সম্পত্তির মালিক হন।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এই সব সম্পত্তি আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে দুই বছর পূর্বে বৃদ্ধ মাকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসে বড় মেয়ে খাদিজা।কিছুদিন যেতে না যেতেই তার ছোট বোনের স্বামী সার্ভেয়ার মো.আতিক মিয়ার পরার্মশে একমাত্র বড় ভাই আসাদুজ্জামান কে বঞ্চিত করে সকল সম্পত্তি মা জমিলা খাতুনের কাছ থেকে কৌশলে লিখে নেয় তারা।
সম্পত্তি লিখে নেওয়ার পর থেকেই মেয়ে খাদিজা প্রতিনিয়ত মাকে গলায় রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে চালায় অমানবিক অত্যাচার।যার একটি ভিডিও পাওয়া যায়।
প্রতিবেশী জালু মিয়া নামে এক ব্যক্তি বলেন,বৃদ্ধার চিৎকারে আমাদের বসবাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।প্রতিনিয়ত এই মহিলাকে করা মারধরের আওয়াজে আমাদের ঘুম ভাঙে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, বৃদ্ধার প্রতি এমন নিষ্ঠুর অত্যাচার দেখে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করতে গেলে আমাদেরকে গালিগালাজ করে খাদিজা। আমার মাকে আমি যা খুশি তা করব, তোদের কি?বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোদের নামে মামলা দিব বলে হুমকি দিয়ে থাকে।
এছাড়াও তারা বলেন, নিষ্ঠুর অত্যাচার দেখে চোঁখের পানি ধরে রাখা দায়। বৃষ্টির মধ্যে কলাবাগানে কলা গাছের সাথে বেঁধে রেখে বৃদ্ধাকে মারপিট করা হত।
মা তার দুই মেয়েকে সম্পত্তি লিখে দেওয়ায়,অভিমানে ছেলে আসাদুজ্জামান মায়ের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল।পরে নির্যাতনের খবর শুনে বৃদ্ধ মাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়।
এই বিষয়ে ছেলে আসাদুজ্জামান বলেন,আমার মায়ের উপর নির্যাতন হয়েছে তা আমি আগে জানতাম না। নির্যাতনের ঘটনা দেখে, সঙ্গে সঙ্গে মাকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি ও চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। এখন থেকে মা আমার কাছে থাকবে। এ বিষয়ে দুই বোন ও বোন জামাই আতিক মিয়ার বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান তিনি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে খাদিজা আক্তারের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠো ফোনে খাদিজা জানান আমার মা পাগল তাই বেঁধে রাখি।
ছোট মেয়ে তাসলিমা আক্তার বলেন আমার মায়ের উপর এমন নির্যাতন হয় এটা আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম এখন থেকে মায়ের খোঁজখবর নিব।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী বলেন জমিলা খাতুন একদম সুস্থ, তাকে পাগল বানিয়ে রাখা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তার দুই মেয়ের বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী (কর্মকর্তা) মো.রেজাউল করিম বলেন, এধরণের ফৌজদারি অপরাধ কোনভাবেই কাম্য নয়।তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।