মহিউদ্দিন রানা, নিজস্ব প্রতিবেদক (ময়মনসিংহ):ঘরে তালা দিয়ে সম্প্রতি ঢাকায় ছোট মেয়ের বাসায় বেড়াতে যান মোছা. রোকেয়া ইসলাম (৫৫)। সেখান থেকে ফিরে এসে দেখেন বসতঘরে ঢুকার মাঝ রাস্তায় ইটের দেয়াল তুলে দিয়েছেন তাঁর স্বামীর দুই সহোদর ও ভাতিজা। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামে। এদিকে ইটের দেয়াল তৈরির ফলে গত ৩ দিন ধরে মেয়েদেরকে নিয়ে ঘরে ঢুকতে পারছেন না ভুক্তভোগী এ নারী। এ অবস্থায় থানায় ৩ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
থানায় দেওয়া অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়,
রোকেয়ার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম মারা যান ২০০৯ সালে। স্বামীর
রেখে যাওয়া ৩ শতক জমির ওপর মেয়েদেরকে নিয়ে বসবাস করছিলেন মোছা. রোকেয়া ইসলাম। ওই অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় ছোট মেয়ের বাসায় বেড়াতে যান রোকেয়া। সেখান থেকে গত (১২ জানুয়ারি) ফিরে এসে দেখেন বসতঘরে ঢুকার মাঝ রাস্তায় বিশাল ইটের তুলে দিয়েছেন তারই আপন দেবর মো. শামীম মিয়া (৫৫), সেলিম মিয়া (৫৭) ও ভাতিজা কমল (৪২)।
ভুক্তভোগী রোকেয়া ইসলাম বলেন- ‘ আমার কোনো ছেলে নেই। ৪ জন মেয়ে। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই দেবরেরা ও তাঁর ভাতিজারা আমাদের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। পাশাপাশি আমাদেরকে এখান থেকে উচ্ছেদ করারও চেষ্টা করেছে। মানসম্মানের ভয়ে এদের সব অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করেছি। আর সেই সরলতার সুযোগ নিয়ে এখন আমার ঘরে ঢুকার রাস্তাই বন্ধ করে দিছে। শুধু তা-ই নয়, রাস্তা বন্ধ করার পর
আমি থানায় অভিযোগ দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। আর পুলিশের সামনেই আমিসহ আমার মেয়েদেরকে মারতে আসে।
আমি প্রশাসনের কাছে এই অত্যাচারের বিচার চাই।’
এসব প্রসঙ্গে জানতে মো. শামীম মিয়ার নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর কথা হয়
ভাতিজা কমলের সঙ্গে। কমল বলেন- ‘ আমরা আমাদের জায়গাতেই দেয়াল তুলেছি। আর যেই ঘরের কথা বলা হচ্ছে, সেটা ২০২২ সালে আমাদের নামে লিখে দিয়ে তাঁদের প্রাপ্য জমি বুঝে নিয়েছে তাঁরা। এরপর ৩ মাসের সময় চেয়ে দীর্ঘদিন পরও বিভিন্ন তালবাহানা করে আমাদের জমি ছাড়েনি। তাই বাধ্য হয়ে দেয়াল তৈরি করা হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন- ‘ লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। আর যেহেতু বিষয়টি জমি সংক্রান্ত, উভয় পক্ষের সাথে না বসে এটি সমাধান করা যাবেনা। দ্রুত উভয় পক্ষকে ডেকে এনে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’