নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ :
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে পিয়ন পদে চাকুরী স্থায়ীকরণের আশ্বাস দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঈশ্বরগঞ্জ ডি.এস. কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শহীদুল্লাহ (৫২) এর বিরুদ্ধে। আজ (১৫ মে) সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর এ অভিযোগ করেন ঈশ্বরগঞ্জ ডি.এস. কামিল মাদ্রাসার অস্থায়ী পিয়ন মো. জহিরুল ইসলাম (২৪)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে হৃদরোগে মারা যান জহিরুলের পিতা ঈশ্বরগঞ্জ ডি.এস. কামিল মাদ্রাসার পিয়ন আতিকুর রহমান মানিক। বাবার মৃত্যুতে সংসারে শুরু হয় টানাপোড়ন। পরে সংসারের টানাপোড়ন মেঠাতে বাবার পদে অস্থায়ী হিসেবে যোগ দেন জহিরুল ইসলাম। দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকলে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকুরী স্থায়ীকরণের প্রস্তাব দেন ঈশ্বরগঞ্জ ডি.এস. কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শহীদুল্লাহ।
চাকুরী স্থায়ীকরণের আশায় বছরদুয়েক আগে বাবার এককালীন অবসের টাকা, গোয়ালের গরু, ফসলি জমি বন্ধক রেখে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা কয়েক দফায় অধ্যক্ষের হাতে তুলে দেন জহিরুল। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও চাকুরী স্থায়ীকরন না হলে টাকা ফেরত চাইতে থাকেন তিনি। এ অবস্থায় টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন ওই অধ্যক্ষ। অবশেষ উপায় না পেয়ে ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী জহিরুল।
এদিকে অফিস সহায়ক পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ তোলেন পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামের মো. মোস্তাকিম নামে আরেক ব্যক্তি। মোস্তাকিম জানায়, অফিস সহায়ক পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকা নেয় ওই অধ্যক্ষ। চাকুরী না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে সপ্তাহখানেক আগে ৩ লাখ টাকা ফেরত দেন ওই অধ্যক্ষ।
এদিকে মোস্তাকিমের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে তা ফেরত দিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান ওই অধ্যক্ষ।
কিন্তু জহিরুলের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ঈশ্বরগঞ্জ ডি.এস. কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শহীদুল্লাহজা জানান, জহিরুলের সাথে আমার কোন লেনদেনই হয়নি। বরং জহিরুল আজ (১৫ মে) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে তাঁর লোকজন নিয়ে আমার অফিসে ঢুকে আমাকে লাঞ্ছিত করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘ চাকুরী স্থায়ীকণের আশ্বাসে পিয়নের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। আবার ওই পিয়নের বিরুদ্ধে লাঞ্ছিতের অভিযোগও দিয়েছে অধ্যক্ষ। দু’টোই তদন্ত করা হচ্ছে। এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’