ফাহাদ, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:
রঙীন স্বপ্ন দেখিয়ে নিজ এলাকার সহজ-সরল বিধবাসহ বহুলোকের হিসাববিহীন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ধূর্ততার সাথে বিদেশ পলায়ন করেছে হাইকোর্টের উকিল পরিচয়ধারী চাটখিলের লম্পট হুমায়ুন কবির (৩৬)।
খবরে প্রকাশ, নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানার বদলকোট এলাকার উম্মে হামিদা ডালিয়ার (৫৫) সাথে বহুদিন যাবত পরিচয় একই থানার সুন্দরপুর এলাকার ভদ্রবেশী হুমায়ুন কবিরের। এই হুমায়ুন নিজেকে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গর্বের সাথে পরিচয় দিয়ে থাকেন। হামিদার সাথে দীর্ঘদিন পরিচিতির একপর্যায়ে হুমায়ুন ধরাকে সরাজ্ঞান বুঝিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে দুই লক্ষ টাকা ধার নিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের একটি চেক (যার এসবি নং ৯০৪৮৩৪৬ এবং হিসাব নাম্বার ০১২৪৩১১০০০০৬৪৫৮ চাটখিল শাখা, নোয়াখালী) ধরিয়ে দিয়ে টাকা ফেরতের বিশ্বাস স্থাপন করেন।
তারপর বিভিন্ন অজুহাতে উপকার করার আশ্বাসে হিসেব ছাড়াই টাকা নেন সঠিক সময়ে ফেরত দেওয়ার শপথ দিয়ে। কিন্তু না জানিয়েই একপর্যায়ে কানাডায় পাড়ি দিলেন এই ভদ্রবেশী দু’পায়া ভয়ংকর জন্তু প্রতারক হুমায়ুন।
অপরদিকে উক্ত টাকা ফেরত প্রদানের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও সেই প্রতারক টাকা ফেরত দেয়ার মিথ্যা আশ্বাস ও রঙিন স্বপ্ন দেখিয়ে নানান কায়দায় আরও টাকা বাগিয়ে নেয় হামিদার কাছ থেকে। এরপরও সে মিষ্টি বুলিতে আবার পাঁচ লক্ষ টাকা ধার চাইলে হঠাৎ করে ছলচাতুরি টের পেয়ে টাকা ফেরত এর জন্য জোর তাগাদা দেন হামিদা।
ক্রমেই সন্দেহ ভারী হয়ে ওঠে এই ভদ্রবেশি নরপশুর উপর। টাকা ফেরতের ব্যাপারে কোন লক্ষন বা সদুত্তর না পেয়ে গত ১২/০৩/২০২৪ ইং তারিখে নিয়মানুযায়ী সেই চেক ব্যাংকে জমা দিলে তা সরাসরি অপর্যাপ্ত তহবিল উল্লেখ্যে প্রত্যাখ্যাত হয়।ওদিকে ইতর হুমায়ুনের ফোন বন্ধ পেয়ে কোন উপায়ান্তর না দেখে হামিদা ঠিকানা অনুযায়ী সরাসরি উকিল নোটিশ পাঠাতে বাধ্য হন ১৯/০৩/২০২৪ ইং তারিখে।
হামিদা বিষয়টি ঢাকার সিনিয়র গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মী কামাল হোসেনকে অবগত করেন। কামাল হোসেন সেই বাটপার হুমায়ুনের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে বক্তব্য নিতে চাইলে হুমায়ুন কোন উত্তর না দিয়ে আক্রমনাত্মক অতি নিকৃষ্ট, বিদঘুটে ও বজ্জাতের মত আচরণ করে কেটে দেয়।
পরবর্তীতে সেই বাটপারকে আর ফোনে পাওয়া না গেলে সাংবাদিক কামাল তাৎক্ষণিক গোপন অনুসন্ধানে নেমে পড়েন। চমৎকার দক্ষতার সাথে এই চৌকস সাংবাদিক সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে জানতে পারেন সেই প্রতারক প্রায় আট মাস আগেই কানাডায় পালিয়েছেন।
আনুসন্ধানে আরও পাওয়া যায়, হুমায়ুন একটি প্রতারক চক্রেরও দু:সাহসী নেতা। দাপুটে প্রভাব দেখিয়ে সমস্ত অসাধ্যকে সাধন করতে পারেন এমন আশ্বাসে বিদেশ নেয়ার নামে বহু লোককে নানান আশা-ভরসা ও আকাশ কুসুম কল্পনায় কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও জিম্মি করে সে মহানন্দে দূর দেশে ভিজিট ভিসায় নির্ভয়ে ফুর্তি করে বেড়াচ্ছেন।
অনেকের মতে, জনসেবার নামে টাকা আত্নসাতই নাকি তার নেশা ও পেশা। অন্যদিকে ভুক্তভোগীরা টাকার অভাবে ও লজ্জায় মুখ দেখাতেও নারাজ। অনেকেই সর্বশান্ত ও নি:স্ব হয়ে গেছেন হুমায়ুনের ভয়ানক প্রতারণার কবলে। জনতার মতে,হুমায়ুন সমাজের বিগড়ে যাওয়া নোংরা চরিত্রযুক্ত কুসন্তান বটেই।
যদিও হুমায়ুনের জ্ঞাতিগুষ্টিরা বলে বেড়ান, তার মতো সত্যবাদী, সৎ ও চরিত্রবান বাংলাদেশে আর একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না!
বিশেষ অনুসন্ধানে সাংবাদিক কামাল উদঘাটন করলেন সেই ভন্ড বজ্জাতের জাতীয় পরিচয় পত্র ও পাসপোর্ট বিবরণী। সেই বিবরণী মতে হুমায়ুন একজন অবিবাহিত লেবার মাত্র। যদিও বাস্তবে সেই চিটার বিবাহিত এবং তিন সন্তানের যথাযোগ্য পিতা।
এই যোগ্য পিতা বিবাহের পরই জালিয়াতি করে পাসপোর্ট বানিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে!আরও পাওয়া যায় বাটপার হুমায়ুনের আপন বড় ভাই টিটুর ফোন নম্বর। জানা যায়, এই টিটু পেশায় একজন শিক্ষক। তার সঙ্গে সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে উক্ত ঘটনার বিবরণ জানিয়ে সমাধানের উপায় জানতে চাইলে টিটু সহযোগিতা করার আশ্বাসে বলেন তিনি ফোনে কথা বলে জানাবেন। কিন্তু, নির্দিষ্ট সময় পর টিটু কিছুই না জানালে আবারও কামাল সেই বাটপারের ভাই বড়ো বাটপারকে ফোন করলে টিটু সরাসরি অমানুষিক, উদ্ভট ও জোচ্চোরের মতো আচরণ করে কেটে দেন।
গণমাধ্যমকে হামিদা জানান, হুমায়ূন আমার এলাকার সম্মানিত ভদ্রলোক ভেবেই তাকে বিশ্বাস করেছিলাম।
অনেক দেরিতে আমি বুঝতে পেরেছি যে আমি আসলেই ভয়ঙ্কর প্রতারকের খপ্পরে পড়েছি। বাস্তবে সে যে চরম লোভী ও দুষ্ট প্রকৃতির সেটা ভোলাভালা চেহারা দেখলে মনেই হয় না !সে আমার জীবনের জমা শেষ সম্বল টুকুও নিয়ে গেলো!আপনারা যেভাবেই পারেন তাকে ধরার ব্যবস্থা করুন প্লিজ।
গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মী কামাল হোসেন জানান, আমি পেশাগত দায়িত্ব পালনে সারাদেশ ভ্রমণ করে থাকি। জীবনে অনেক বড় বড় অপরাধীদের আইনের হাতে সোপর্দ করেছি ।
আমার দেখা মতে, এই বজ্জাত হুমায়ুনের আচরণ সবচাইতে নিকৃষ্ট ইতর সদৃশ যা সরাসরি জানোয়ার তুল্য। আমি এমন ব্যবস্থা নিচ্ছি যাতে ওই বেয়াদবটা বিশ্বের যেখানেই থাকুক আইনের কাছে ধরা দিতে বাধ্য হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহ প্রয়োজনীয় সকল স্থানে গিয়ে তাকে ধরাশায়ী না করা পর্যন্ত এই অনুসন্ধান ও আইনী প্রক্রিয়া জোড়ালো ভাবে চালু থাকবে ইনশাআল্লাহ।