সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
‘গৃহস্থের বাড়ির তালা ভেঙে শাড়ি, গয়না, টিভিসহ প্রায় ৭ লাখ টাকার মূল্যবান সরঞ্জাম চুরি করে নিয়ে যায় চোরের দল। এতে কান্নায় ভেঙে পড়লেও কে এই কাজ করেছে বুঝতে পারছিলেন না ভুক্তভোগিরা।
এতে নিশ্চিন্ত হয়ে একদিন চুরি করা একটি নতুন শার্ট গায়ে দিয়ে পাড়ায় ঘুরতে নামে চোর। আর সেই শার্ট গায়ে দেখে চোরকে সনাক্ত করে ফেলেন ঐ বাড়ির গৃহিনী। শেষে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে চোরটিকে আটক করার পর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরো এক চোরকে ধরে ফেলে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই জনকেই আদালতে প্রেরণ করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে।
থানা ও ভুক্তভোগি সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর ইউনিয়নের পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামের প্রবাসী বোরহান উদ্দিনের স্ত্রী শিরিনা আক্তার (৩৭) ঢাকা থেকে গার্মেন্টন্সের পন্য সংগ্রহ করে বিক্রি করতেন। গত ১ জুলাই শিরিনা আক্তারের মা অসুস্থ হলে তিনি মার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে যান।
সেখানে চিকিৎসা শেষে গত ২৩ জুলাই বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন চোরেরা পেছনের দরজা ভেঙে ঘরে থাকা প্রায় সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণালংকার, ৮টি নতুন শার্ট, একটি টেলিভিশনসহ মূল্যবান সরঞ্জাম নিয়ে গেছে। এতে তিনি হতাশ হয়ে পড়ে পুলিশে খবর দেন। কিন্তু কে বা কারা এ চুরি ঘটিয়েছে তা তিনি বুঝতে পারছিলেন না।
এদিকে চুরির পর এতদিনেও ধরা না পড়ায় অতি আত্মবিশ্বাসী এক চোর মোঃ শাহীন (১৯) গত বুধবার ঐ বাড়ি থেকে চুরি করা একটি নতুন শার্ট পরে পাড়ায় ঘুরতে বের হলে সেটি চোখে পড়ে শিরিনার। শার্টটি দেখে চিনতে পেরে সে ঘটনাটি পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে চোর শাহীনকে গ্রেপ্তার করে।
পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির কথা স্বীকার করে জানায় তার সাথে চুরিতে অংশ নেয় রাকিব হাসান (১৯) নামক আরও একজন। এসময় তার কাছ থেকে চুরিকৃত শার্ট উদ্ধার করা হয়। পরে রাকিবকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এছাড়া তাদের কাছ থেকে চুরিকৃত টেলিভিশন এক ব্যক্তি ক্রয় করায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে সে টিভিও উদ্ধার করা হয়।
সীতাকুন্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ জানান, চুরির পর বাদী আসামিদের পরিচয় জানাতে পারেননি। তিনি ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না। বুধবার তিনি দেখেন তার চুরি যাওয়া শার্ট শাহীন নামক একজন পরে ঘুরছে। এতে তাকে সন্দেহ করে আমাদের জানালে আমরা অভিযান চালিয়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঐ যুবককে গ্রেপ্তার করি। এরপর তার কাছ থেকে জড়িত রাকিবের নাম জানতে পারলে তাকে গ্রেপ্তার করি।
তাদের কাছ থেকে চুরিকৃত কয়েকটি শার্ট, একটি এলইডি টিভি (বিক্রি করে দেয়া) উদ্ধার করি। এছাড়া স্বর্ণালংকারের বিষয়ে তারা কোন তথ্য এখনো দেয়নি। আমরা চেষ্টা করছি সেগুলোও উদ্ধার করতে। আসামিদের বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।