১লা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ১৩ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি| রাত ১:৫২| শরৎকাল|

ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ আশরাফুলেরও প্রাণ গেল

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, মে ২৬, ২০২৩,
  • 244 Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীতে জেলা ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ আশরাফুল ইসলামও (২০) মারা গেছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গুলিবিদ্ধ সাদেকুর রহমান (৩২) মারা যান।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় শহরতলির চিনিশপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন স্থানে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত সাদেকুর রহমান জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। সাদেকুর নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বাদুয়ারচর এলাকার বাসিন্দা। আর নিহত আশরাফুল ইসলাম শহরের সাটিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তারা সম্প্রতি ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা।

পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতারা জানান, গত ২৬ জানুয়ারি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে সভাপতি, মাইনুদ্দিন ভুইয়াকে সিনিয়র সহসভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রদলের ৫ সদস্যবিশিষ্ট (আংশিক) কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এর পর থেকে ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।

এর জেরে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবীর খোকনের চিনিশপুরের বাসভবন তথা জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার চিনিশপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন স্থানে মোটরসাইকেল শোডাউন করে বিক্ষোভ করছিলেন পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।

এ সময় ছাত্রদলের অপর গ্রুপের নেতাকর্মীরা অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় মাথায় ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয় পদবঞ্চিত ছাত্রদল গ্রুপের দুই নেতা সাদেক ও আশরাফুল। পরে পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুইজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সাদেকুর রহমানের ও আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় আশরাফুল ইসলামের মৃত্যু হয়। এদিকে সাদেকুরের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক বিচারের দাবিতে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন থেকে বের হয়ে বৌয়াকুড় মোড়ে এসে শেষ হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই জেলা বিএনপির সদস্য ও হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ভূইয়ার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।

আজ শুক্রবার সকাল ১১টায় জেলা ছাত্রদলের সদ্য বহিষ্কৃত সহসভাপতি মাইনউদ্দিন ভুইয়া দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকনের নির্দেশে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদের নেতৃত্বে এই হামলা ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। হামলায় গুলিবিদ্ধ সাদেকুর গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ও আশরাফুল আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় মারা গেছে। আজকে বাদ আছর বাদুয়ারচর স্কুল মাঠে সাদেকুরের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। আর আশরাফুলেরটা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ সকাল ৬টায় আশরাফুলের একটি অপারেশন হয়েছিল।

নরসিংদীর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুনুর রশীদ বলেন, হামলায় গুলিবিদ্ধ সাদেকুর গতকাল সন্ধ্যায় ও আশরাফুল আজ সকালে মারা গেছে। সাদেকুরের মাথায় ও আশরাফুলের পিঠে গুলি লেগেছিল। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। কোনো গ্রেপ্তারও নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরি অন্যান্য নিউজ