ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
জীবন যুদ্ধে হার না মেনে দুই হাত ও পায়ের হাঁটুর উপর ভর দিয়ে চলাচল করে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া শারীরিক প্রতিবন্ধী আহসান হাবীবের পাশে দাড়ালেন ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) জুয়েল আহমেদ।
শনিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নামাপাড়া গ্রামের আদর্শ বাজারে আহসান হাবীবের ওষুধের দোকানে হাজির হয়ে হুইল চেয়ার প্রদান করেন উপজেলার এই সর্বোচ্চ কর্মকর্তা। পরে তার শারীরিক ও পারিবারিক অবস্থার বিষয়েও খোঁজ-খবর নেন।
আহসান হাবীব ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নামাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মমতাজ উদ্দিনের ছেলে।
‘জন্ম থেকে বিকলাঙ্গ হয়েও অনেকের আদর্শ হয়ে উঠা আহসান হাবীব’ এর জীবনসংগ্রামের বিষয়টি সম্প্রতি নজরে আসে ত্রিশাল উপজেলার সর্বোচ্চ এই কর্মকর্তার। এরপরই দীর্ঘ কষ্টের ইতি টেনে চলাচলের জন্য হুইল চেয়ার পেলেন এই প্রতিবন্ধী।
হুইল চেয়ার প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আপেল মাহমুদ, ত্রিশাল প্রেস ইউনিটির সভাপতি সাইফুল আলম তুহিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান সুমন প্রমূখ।
হুইল চেয়ার পেয়ে আহসান হাবীব বলেন, ‘আমি শারীরিক ভাবে বিকলাঙ্গ। চেষ্টা করি ব্যবসা করে চলতে। এই ব্যবসা দিয়ে সংসার চালানো অসম্ভই প্রায়, তবু কষ্ট করে চলি। আমার এ কষ্টের কথা জেনে ইউএনও স্যার আমাকে একটি হুইল চেয়ার উপহার দিয়েছেন। এটা পেয়ে আমার অনেক আনন্দ, খুশি লাগতাছে। আমি এখন সারাদিন ফুর্তিতে দোকানদারি করবাম। ইউএনও স্যার ও স্যারের পরিবারের জন্য আমি সবসময় দোয়া করবো।’
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘আহসান হাবীব যেনো চলাচল করতে পারে সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি হুইল চেয়ার দেওয়া হয়েছে। সে যে ঘরে ব্যবসা-বানিজ্য করে তা একেবারেই ভাঙাচোরা। তার ব্যবসা যেনো ভালোভাবে চালাতে পারে সেজন্য আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বলেছি ঘরটা যেনো ঠিক করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সে যেনো বিনা সুদে ঋণ পায় এবং নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারি কোনো আর্থিক সহায়তার আওতায় আসে তার চেষ্টা করবো।’
উল্লেখ্য, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলেন আহসান হাবীব (৩৫)। আহসান হাবীবের দুই হাত ও দুই পা বিকলাঙ্গ (প্রতিবন্ধী)। প্রতিবন্ধী হওয়ার পরও কারও কাছে হাত বাড়ান না তিনি। কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করার প্রত্যয়ে বেছে নেন কর্ম। অন্যের উপর বোঝা নয়, নিজ কর্মে আয় উপার্জন করে বেঁচে থাকতে চায় আহসান হাবীব।