আত্মহত্যায় নয়, জুয়া খেলে টাকা হেরে গৃহবধূ বিউটিকে বেধড়ক মারপিট করে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে। চার সন্তানের জননী বিউটি হত্যার সুষ্ঠ তদন্তের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার।
আজ রবিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের আজিজপুর এলাকায় বিউটিকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ তুলে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
এ সময় লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন বিউটির ভাবি শ্যামলী বেগম। বক্তব্যে দাবি করা হয় বিউটির স্বামী জান্নাতুল ইসলাম একজন পাক্কা জুয়াড়ী। সে তাস ও মোবাইলে অনলাইন জুয়ায় দীর্ঘদিন ধরে আসক্ত। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকা ঋণ করে জুয়ায় হেরে যায়। এ নিয়ে সাংসরিক অশান্তি দেখা দেয়।
ঘটনার দিন গত ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার স্থানীয় কালীরহাট বাজারের একটি দোকানে বিকেলে জুয়া খেলারত অবস্থায় বিউটির সাথে জান্নাতুলের তর্ক হয়। এতে বিউটিকে শেষ করে দেওয়ার কথা বলে স্বামী জান্নাতুল।
২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বেধড়ক মারপিটের একপর্যায়ে বিউটি মারা যায়। ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে তাঁকে (বিউটিকে) নিজ পরিহিত ওড়নায় গলায় ফাঁস দিয়ে ঘরের ধর্ণায় লাশ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় জান্নাতুল।
পরে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে লাশ ময়না তদন্ত করে পরিবারের নিকট দেয়।
বিউটি বেগমের ছোট ভাই ছামিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার বোন আত্মহত্যা করতে পারে না। তাঁর স্বামী জান্নাতুল জুয়া খেলে টাকা হেরে সংসারে অশান্তি করতো। বোন ও ৪ সন্তানদেরকে খাবার এবং পোষাক দিতে পারতো না। বোনকে ছোট সন্তান নিয়ে চলে আসতে বললে, সে আসেনি। বাচ্চাদের দিকে তাঁকিয়ে কষ্ট/নির্যাতন সহ্য করে ছিল। আমার বোনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এখনও জান্নাতুল পলাতক। আমরা পাটগ্রাম থানায় মামলা দিতে গিয়েছি, পুলিশ মামলা নেয়নি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিউটির ছেলে গোলাম মোস্তফা (১৪), লোকমান আলী (৯ মাস), বাবা জহির উদ্দিন, মা ছামিনা খাতুন, বড় বোন খালেদা বেগম, ভাই ছামিউল ইসলামসহ স্থানীয় এলাকাবাসি।
সংবাদ সম্মেলনে বিউটির পরিবার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকান্ডে জড়িত স্বামীর ফাঁসির দাবি করেন।
এ ব্যাপারে পাটগ্রাম থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ‘মামলা না নেওয়ার কথাটি সত্য নয়। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা করেছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’