ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের নায়েক নুরুল আমিনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনা ঘটেছে। পরে ভুক্তভোগী পরিবার ৯৯৯-এ ফোন করে সহযোগিতা চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে উপজেলার কামারগাঁও ইউনিয়নের হরিয়াতলা পূর্বপাড়া এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বাড়ির পাশের একটি রাস্তা নিয়ে ভগ্নিপতি অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের নায়েক নুরুল আমিনের সঙ্গে শ্যালক কামারগাঁও ইউনিয়ন আ. লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আমীনের বিরোধ চলে আসছিল।
এরই জেরে গেল ১১ মার্চ নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার সময় ভগ্নিপতির ওপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে জখম করে শ্যালক নুরুল আমীন। এনিয়ে দুই পরিবার সংর্ঘষে জড়িয়ে উভয় পক্ষের ১০ থেকে ১২ আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ ঢাকায় পাঠানো হয়।
এদিকে গেল ১৮ মার্চ ঢাকায় নিউরোসাইন্স হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আ. লীগ নেতা নুরুল আমীন (৪৫)। তিনি একই এলাকার জাবেদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার একটি হত্যা মামলা করেন। এতে নিহত নুরুল আমীনের বোন আম্বিয়া খাতুন, ভাগ্নে আশিক ও সাথীকে আসামি করা হয়।
পরে তারা গ্রেপ্তার এড়াতে বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। এই সুযোগে পূর্বশক্রতার জের ধরে স্থানীয় রফিকুল ইসলাম মেম্বারের নেতৃত্বে (১৯ মার্চ) পরিত্যক্ত বাড়িতে হামলা চালিয়ে পেশনের টাকা, স্বর্ণ, আসবাপত্র ও সেচ পাম্প লুটসহ ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে বলে জানান অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য নুরুল আমিন।
আহত নুরুল আমিন মুঠোফোনে বলেন, রাস্তা নিয়ে বিরোধের জেরে শ্যালক নুরুল আমীন আমাকে কুপিয়ে আহত করে। আমার শ্যালক হাসাপাতালে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে রফিকুল মেম্বারের নেতৃত্বে আমার বাড়িতে ভাঙচুর, লুট ও অগ্নিসংযোগ চালানো হয়।
আমার শ্যালক কিভাবে মারা গেছে আমি নিজ চোখে দেখে নাই। আমিও মৃত্যুর মুখে ছিলাম। কোন জ্ঞান ছিলনা। এ ঘটনার পর আমার পুরো পরিবার বাড়ি ছাড়া আছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন তিনি।
তবে এ ঘটনায় জড়িত থাকার ব্যাপারে রফিকুল ইসলাম মেম্বারের পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কামারগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান নাঈমুর রহমান উজ্জল জানান, নিহত নুরুল আমিনের জানাযার পর ওই অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াজেদ আলী জানান, আ. লীগ নেতার মৃত্যুর সংবাদে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যের বাড়িতে হামলার করা হয়। ঘটনায় মামলা করার প্রস্ততি নিচ্ছেন ভুক্তভোগী পরিবারা। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।