ময়মনসিংহের তারাকান্দায় সেফটি ট্যাংক থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধারের মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামীর পরিচয় সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিটিআই)।
এর আগে (৩ জুলাই) বৃহস্পতিবার দুপুরে তারাকান্দা থানার দাদরা গ্রামে পরিত্যক্ত বাড়ীর সেপটিক ট্যাংকে অজ্ঞাত নারীর লাশ পাওয়া যায়।
সংবাদ পেয়ে তারাকান্দা থানার পুলিশ, র্যাব ও সিআইডির পাশাপাশি পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার একটি টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে নেমে পড়ে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিবিআই মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে পিবিআইয়ের ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তারের সার্বিক সহযোগীতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও তার টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের পরিচয় সনাক্তের মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামীর পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
গতকাল ভোর রাতে ফুলপুর উপজেলার বেপারী পাড়া এলাকা থেকে প্রধান আসামি তারাকান্দা উপজেলার দাদরা গ্রামের আলাল মিয়ার ছেলে রোহান মিয়া (২৫) গ্রেপ্তার করে।
এ সময় পিবিআইয়ের হেফাজতে থাকা আসামি রোহান মিয়া লোমহর্ষক এ হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ সময় নিহত সুফিয়ার সাথে থাকা মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, নিহত নারী ফুলপুর উপজেলার রুপসী ইউনিয়নের পাতিলগাঁও গ্রামের কেরামত আলীর মেয়ে সুফিয়া খাতুন।
গত (২৯ জুন) রবিবার ছাগল বিক্রি করতে তারাকান্দা বাজারে যায়। সন্ধ্যার পর থেকে পরিবার তার খোঁজ না পেয়ে ফুলপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
ময়মনসিংহ পিবিআই সুত্রে জানা যায়, রোহান তার একজন বন্ধুর কাছ থেকে সুফিয়ার মোবাইল নম্বরটি সংগ্রহ করেন। এর পর সুফিয়ার সাথে প্রেমের অভিনয় করতে থাকেন।
গত (২৯ জুন) রবিবার সুফিয়া তারাকান্দা বাজারে ছাগল বিক্রি করতে আসলে রোহান তার সাথে দেখা করেন। একপর্যায়ে সুফিয়াকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন এবং রাতে দাদরা গ্রামের গিয়াস মিয়ার পরিত্যক্ত বাড়ীতে নিয়ে যান। বাড়িতে যাবার পর সুফিয়াকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সুফিয়ার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়।
এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় সুফিয়া উত্তেজিত হয়ে রোহান মিয়ার গালে থাপ্পড় মারেন। সাথে সাথে রোহান মিয়া সুফিয়ার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বা’স’রো’ধ করে হত্যা করেন।
হত্যার পর সুফিয়ার সাথে থাকা মোবাইল ফোন ও ছাগল বিক্রির নগদ ৪ হাজার টাকা নিয়ে নেন। ঘটনাটি গোপন রাখতে মৃতদেহ টয়লেট সেফটি ট্যাংকে রেখে যান।
ময়মনসিংহ পিবিআই পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার জানান, পিবিআই এর আভিযানিক টিমের নিরলস প্রচেষ্টা ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি শাখার সহযোগীতায় মাত্র একদিনের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের মূল রহস্য ও প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এ ঘটনার সাথে জড়িত কারা। প্রধান আসামি রোহান মিয়াকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।