৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৫শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি| রাত ১০:৩৮| বর্ষাকাল|
শিরোনাম:
রামপুরা থানায় বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্রসমাজের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের সঙ্গে আমান উল্লাহ আমানের শুভেচ্ছা বিনিময় ২২ বছর পর গফরগাঁও সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নির্বাচন অনুষ্ঠি ভৈরবে ইয়াবা ও হেরোইনসহ মামা ভাগনী আটক নান্দাইলে সাবেক এমপি খুররম খান চৌধুরীর ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত পাইকগাছায় সেতুর টোল স্থায়ীভাবে অবমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন জিয়াউর রহমান রাজাকারকে প্রধানমন্ত্রী করে দল গঠন করেন: মুফ‌তি ফয়জুল ক‌রীম চলে গেলেন কুড়িগ্রামের প্রবীণ সাংবাদিক মমিনুল ইসলাম মঞ্জু এইচএসসি পরীক্ষা শেষে অফিস কক্ষে ওএমআর শিট পূরণ করায় দুই শিক্ষক গ্রেপ্তার গফরগাঁওয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ

ত্রিশালে ভয়াবহ মাদক বিস্তারে ক্ষুব্ধ জনতা: ঘেরাও, বিক্ষোভ, আল্টিমেটাম

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
  • Update Time : মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫,
  • 18 Time View

ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌরসভার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কেরানী বাড়ি মোড় এলাকায় ভয়াবহভাবে বিস্তার লাভ করা মাদক ব্যবসা ও সেবনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে স্থানীয় জনগণ।

“চলো যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে” শ্লোগান ধারণ করে মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল ১১টায় এলাকাবাসীর আয়োজনে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় রোডের কেরানী বাড়ি মোড়ে এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।

বিক্ষোভ শেষে এলাকাবাসী একটি মিছিল বের করে চিহ্নিত মাদককারবারীদের বাড়ি ঘেরাও করে। বাড়িতে কাউকে না পেয়ে উত্তেজিত জনতা ভাঙচুরেরও চেষ্টা করে। পরে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এসময় উপস্থিত বিক্ষোভকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই মাদককারবারী মিনা খাতুন, তার ভাই মুক্তা মিয়া, শাহীনসহ আরও অন্তত দশজন ব্যক্তি এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা চালিয়ে আসছে।

তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

স্থানীয় শিক্ষার্থী নাদিম হোসেন বলেন, “পাঁচ বছর আগেও আমাদের এলাকা অনেক শান্তিপূর্ণ ছিল। অথচ এখন সহজলভ্য হওয়ায় অল্প বয়সের ছেলেরাও মাদক সেবন করে।

এতে করে তারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। স্থানীয় মিনা, তার ভাই মুক্তা, শাহীনসহ তাদের আরও কয়েকজন সহচর মাদক কেনাবেচায় জড়িত।

আমি শুনেছি তারা প্রতি মাসে প্রায় সত্তুর লাখ টাকার মাদক কেনাবেচা করে। এরকম চলতে থাকলে পুরো ত্রিশালের মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়বে।”

আরেক স্থানীয় বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন সোহাগ বলেন, “মাদকের ভয়াবহতা বাড়ায় এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়েছে। এখানে প্রতিনিয়ত মাদক কেনাবেচা হচ্ছে।

এটা এ এলাকার সকল জনগণ দেখতে পারছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে আক্রমণ করে তারা। আমরা প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোনো সুরাহা পাইনি।

মাদক বিক্রি গ্রুপের সম্রাজ্ঞী মিনা বলে, ‘পুলিশ ও সাংবাদিক আমরা কিনে নিয়েছি।’ পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়গুলো জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গাঁজাসহ দুই যুবককে আটকের পরও, ‘অল্প গাঁজা’ পাওয়ার অজুহাতে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “ত্রিশালের কেরানী বাড়ি মোড় এখন মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। যুবসমাজ ধ্বংসের পথে। চুরি, ছিনতাই, সহিংসতা বাড়ছে।

প্রশাসন দেখেও দেখছে না।” বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী একটি দালালচক্রের আশ্রয়ে এই অবৈধ ব্যবসা চলছে, যার কারণে প্রশাসনও পদক্ষেপ নিতে দ্বিধায় রয়েছে।

বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের উপস্থিতিতেই “ভুয়া ভুয়া” স্লোগান তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আন্দোলনকারীরা। তারা বলেন, পুলিশ বরং অভিযোগকারীদের হুমকি দিয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

মানববন্ধন শেষে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করা হবে। স্মারকলিপিতে অবিলম্বে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না করলে আগামীকাল (বুধবার) বিকাল ৩টায় ত্রিশাল থানা ঘেরাও করা হবে।”

এই আন্দোলনের আয়োজনে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সচেতন নাগরিক সমাজ। তারা ঘোষণা দিয়েছেন, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে—কোনোভাবেই মাদকের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ থামবে না।

এবিষয়ে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহমদের ভাষ্য আগেও অভিযান হয়েছে। এখনও অভিযান অব্যাহত আছে।

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়ে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ” মিনা নামের ওই নারীর বিরুদ্ধে মাদকের একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। পরে ওসিকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। তিনি চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, “আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে আছি। এ বিষয়ে আমি আগে অবগত ছিলাম না, দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরি অন্যান্য নিউজ