
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গিয়ে অবহেলার শিকার হয়েছে মমিনুল ইসলাম নামে সাড়ে তিন বছরের এক শিশু। অভিযোগ উঠেছে, তাকে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্ধারিত ওষুধ প্রেসক্রাইব করা হয়েছে।
শিশুটি ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে। নানাবাড়ি অলহরী দুর্গাপুর গ্রামে বেড়াতে এসে অসুস্থ হলে গত ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
পরীক্ষায় প্রস্রাবে সংক্রমণ ধরা পড়লে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন দেন। তবে ফার্মেসির কর্মীরা ও পরিবারের এক নার্স সদস্য এসব ওষুধ শিশুর জন্য অনুপযুক্ত জানিয়ে আবারও অন্য ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেন।
পরে ২৫ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) একই হাসপাতালের আরেকজন চিকিৎসক আগের প্রেসক্রিপশন ভুল বলে শিশুকে নতুন প্রেসক্রিপশন দেন।
শিশুর মা সেলিনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন,“ভুল ওষুধ খাওয়ালে আমার সন্তানের বড় ক্ষতি হতে পারতো। আল্লাহ বাঁচাইছে খাওয়ানোর আগেই জানতে পারছি। একজন ডাক্তার হয়েও শিশুদের চিকিৎসা নিয়ে এমন অবহেলা করা ঠিক নয়। সরকারি হাসপাতাল হলেও আমার বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে ৬শ টাকা খরচ হয়েছে।”
শিশুর মামা খায়রুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মাত্র সাড়ে তিন বছরের বাচ্চাকে কীভাবে এ ধরনের বড়দের ওষুধ দেওয়া হলো বুঝতে পারছি না। ডাক্তার কি ঘুমিয়ে প্রেসক্রিপশন করেছিলেন”
এ বিষয়ে ডা. মেহেদী হাসান বলেন, “এই ডোজ অনুযায়ী এই ওষুধ সাড়ে তিন বছরের বাচ্চাদের দেওয়া উচিত নয়। শিশুদের জন্য সিরাপ দিতে হবে। নিনটোইন এস আর ১০০ মি.গ্রা. ক্যাপসুল ও প্যারাসিটামল 500mg ডোজ শিশুর দেহের সঙ্গে মানিয়ে যায় না। এটি মূলত কিশোর-প্রাপ্তবয়স্কদের ডোজ।”
অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. সাদিয়া আফরিন মৌসুমী বলেন, “এরকম হওয়ার কথা নয়। হয়তো রোগীকে সরাসরি পাইনি বা রোগীর চাপে ভুলবশত এমনটি হয়ে থাকতে পারে।”
ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এস. এম. জিয়াউল বারী বলেন, “প্রেসক্রিপশনে ভুল হয়ে থাকলে সেটি দুঃখজনক, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। শিশুটিকে যে ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়া হয়েছে তা আমাদের হাসপাতালেই করা সম্ভব।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় এ ধরনের অবহেলা শিশুদের জীবনের জন্য হুমকি। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।