নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদী সদর উপজেলা আলোকবালী ইউনিয়নের খোদাদিলা গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মুদি দোকানে আগুন ও লুটপাটের অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা। আজ রবিবার ভোর ৩ টায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আলোকবালী ইউনিয়ন ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী হাসান আলী ও যুবলীগ কর্মী জাকির হোসেন এবং একই ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জয়নুল আবেদিন সরকারের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিনের বিরোধ রয়েছে। তাদের মধ্যে আধিপত্যকে বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ২০ জুলাইও দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়লে হাসান আলী ও জাকির হোসেন গ্রাম ছাড়া হয়ে পড়ে।
এলাকাবাসী জানায়, আগের দ্বন্দ্বের জেরে আজ রবিবার ভোর ৩ টার দিকে হাজী হাসান আলী, জাকির হোসেন ও তাদের লোকজন এলাকায় প্রবেশ করছে এমন সংবাদে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জয়নুল আবেদিনের লোকজন জড়ো হয় এবং হাসান আলীর দোকানে লুটপাট ও ভাঙচুর করে। এছাড়াও একই এলাকার হালিমা বেগমের বাড়ীতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। হালিমা বেগম পেশায় একজন ভিক্ষুক।
ভুক্তভোগী হাজী হাসান আলী বলেন, “গত ১৯ জুলাই আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশের অংশ নেয়ায় পরের দিন (২০ জুলাই) আমাকে ও আমার লোকজনকে অন্যায়ভাবে হামলা চালিয়ে আমাদেরকে বাড়ীতে থেকে বের করে দিয়েছে এবং ২টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ভোর ৩ টার দিকে আমার মুদির দোকান থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার, ইলেক্ট্রনিকস যন্ত্রপাতি, সয়াবিল তৈল সহ বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করে যার বাজার মূল্য প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। আমি ও আমার লোকজন এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেছি, এমন গুজব ছড়িয়ে, তারা হামলা চালিয়েছে। তাছাড়াও এলাকার ভিক্ষুক হালিমা আক্তারের বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করেছে তারা।”
তবে, এ বিষয়ে হালিমা আক্তারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
এ ঘটনায় আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জয়নুল আবেদিন বলেন, “গতকাল রাত ১১.৪৫ টার দিকে আমাদের গ্রামে অস্ত্র ও ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে হাসান আলী ও সন্ত্রাসী জাকির হোসেন এবং তার লোকজন আমাদের উপর হামলা করার চেষ্টা করে।
তারা ১০-১৫ টি হাতবোমার বিস্ফারণ ঘটনায়। আমরা মাইকিং করে এলাকাবাসী জড়ো হওয়ার আহবান জানিয়েছি। তারাও সাড়া দিয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকায় তাদেরকে ধাওয়া করে তাদের ৫ জনকে আটক করে। তবে আমরা ভাঙচুর করিনি। হাসান আলীর মালামাল অন্যত্র সড়িয়ে নিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়ার মাধ্যমে হয়রানি করার যড়যন্ত্র করছে।”
এ বিষয়ে নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম ভুইয়া বলেন, ” ঘটনাস্থল থেকে রাত ৩ টার দিকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫ জনকে আটক করা হয়েছিল। তবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকায় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।”
উল্লেখ্য, গত ২০ জুলাই উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আটজন গুলিবিদ্ধ হয় এবং নাজমুল সিকদার নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।