হাজী জাহিদ,নরসিংদী প্রতিনিধি :
নরসিংদীর করিমপুর বাজারে ইজারার টাকা আদায়ের নামে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় ইজারাদার ইজারাদার সেলিম সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর জের ধরে নরসিংদীর তিন সাংবাদিকের নামে চাঁদাবাজির অপবাদ এনে মিথ্যাচার করছে সেলিম সরকারের চাঁদাবাজির দোসর মাঈনউদ্দিন সরকার।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা হলেন, দৈনিক অধিকার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ও নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান, দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার পত্রিকার প্রতিনিধি ও মাধবদী পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মকবুল হোসেন, অনলাইন পোর্টাল নিউজ টোয়েন্টি ওয়ান এর নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি রাজিব আহমেদ।
এদিকে ইজারাদার সেলিম সরকার নিজে বাঁচার জন্য তার চাঁদাবাজির দোসর মামলাবাজ মাঈনউদ্দিন সরকারের যোগসাজশে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে ভুক্তভোগি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার সহ সোস্যাল মিডিয়ায় মনগড়া সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে মিথ্যাচার করছে।
এলাকায় খোঁজ নিলে স্থানীয় জানান, সেলিম সরকারের চাঁদাবাজির দোসর মাঈনউদ্দিন ইতিপূর্বে ও খোরশেদ মিয়া নামে এক অটোরিক্সা চালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দেয় যার নং ৮১৮। সেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব ছিলেন পিবিআই। অবশেষে পিবিআইয়ের তদন্ত শেষে উক্ত মামলা মিথ্যা প্রমানিত হলে মিথ্যা মামলার দায়ে মামলাবাজ মাঈনউদ্দিন নিজে জেল খাটে।
তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগে চাঁদাবাজ ইজারাদার সেলিম সরকার উল্লেখ করেন যে নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান ও সদস্য মকবুল হোসেন তার চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পত্রিকায় কোন সংবাদ প্রকাশ না করার শর্তে দুই লাখ টাকা দাবি করেছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেন সাংবাদিক মনিরুজ্জামান। চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে ইজারাদার সেলিম সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির নিউজ করেছে বিধায় আমি তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি তবে সাংবাদিকদের চাঁদা দাবির বিষয়ে তার কাছে কোন প্রমাণ নেই বলে ও জানান তিনি। গত বুধবার (৩ মে) তাদের চাঁদাবাজির বিষয়ে করিমপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বাজার কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে তাদের ইজারা বাতিল করে নতুন করে ইজারা দেওয়ার দাবি জানান।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সরেজমিনে করিমপুর বাজারে যান নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান, সমন্বয়ক মকবুল হোসেন ও সঙ্গীয় সাংবাদিক টিম। সেদিন করিমপুর বাজারে ওই সাংবাদিকগণ সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহে গেলে তার সাথে কথা বলাতো দূরের কথা দেখাই পায়নি কেউ। পরে মোবাইল ফোনে তার বক্তব্য নেয়া হয়।
সাংবাদিক টিম করিমপুর বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হয়ে দৈনিক অধিকারসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। এসকল সংবাদ নরসিংদী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়ার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এর সত্যতা যাচাই করে ইজারাদার সেলিম সরকার গং, বাজারের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির সদস্যদেরকে গত ৮ মে একটি লিখিত চিঠি প্রেরণ করেন। যার ফলশ্রুতিতে এলাকার এক সময়ের ছেঁচড়া চোর মাঈনউদ্দিনের যোগসাজশে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করে। (মাঈনউদ্দিনের ছেঁচড়া চুরিসহ বিভিন্ন কার্যকলাপের অনেক আলামত নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্যদের কাছে সংরক্ষিত আছে)
উল্লেখ্য গত ৮ তারিখের পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১০ মে) দুপুর ১২ টা থেকে বিকেল আড়াইটা পর্যন্ত নরসিংদী সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে ইজারাদার সেলিম সরকার গং, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীবৃন্দ, বাজার কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য সদস্যদের উপস্থিতিতে শুনানী শেষে সেলিম সরকার গংদের চাঁদাবাজির অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হয়। সেখানে তারা নিজেরাই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এককালীন টাকা চাওয়ার কথা স্বীকার করে। তাছাড়া তিনটি শিডিউল কিনে চালাকি করে একটি শিডিউল ড্রপ করে ইজারা বাগিয়ে নেয়ার বিষয়টিও প্রমাণিত হলে উপজেলা চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সমস্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আজকেই ইজারা বাতিল করার মতো সকল এডিডেন্স আমার কাছে রয়েছে তবে করিমপুরের একজন এবং আমার অভিভাবক এমপি মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে আগামী কর্ম দিবসের মধ্যে ইজারা বাতিল সংক্রান্ত আদেশ লিখিতভাবে জানানো হবে ।