নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইলিশ শিকারকারী জেলেদের জন্য ভিজিএফের বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী সদর উপজেলার তিন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
প্রশাসন থেকে ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে সারাদেশে গত ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞা চলাকালে প্রশাসন থেকে তাদের জন্য খাদ্য বরাদ্দ দেয়া হলেও চাল পায় নি বরাদ্দপ্রাপ্ত জেলেরা।
নরসিংদী ত্রাণ, পুনর্বাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মতে, ভিজিএফের এর আওতায় নরসিংদী সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ৪০০ জেলের প্রত্যেকের নামে ২৫ কেজি করে ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।
নরসিংদী জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শিউলি বেগম বলেন, “আমাদের কাছে প্রশাসনের চিঠি এসেছিল। আমরা গত মাসেই সদর উপজেলার চাল সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে ডিলারদের মাধ্যমে দিয়ে দেয়া হয়েছে।”
দ্য ডেইলি স্টারের অনুসন্ধানে ৪০০ ভুক্তভোগীর মধ্যে ৪৫ জন ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সাথে কথা হয়। তবে, তারা বলছেন, তারা এই প্রতিবেদকের কাছে প্রথম চাল বরাদ্দ পাওয়ার খবর শুনেছেন।
ইলিশ নিষিদ্ধ থাকার মৌশমে চাল পান নি। বরং নদীতে ইলিশ ধরলে গেলে তাদের জাল পোড়ানো সহ নানা বিড়ম্বনায় পড়ার অভিজ্ঞার কথা বলেছেন।
তবে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানরা বলছেন, তারা চাল এলাকায় বিতরণ করেছেন। বরং এলাকায় বরাদ্দের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি জেলে থাকায় তারা সবাইকে চাল দিতে পারেন নি।
এদিকে সংশ্লিষ্ট ২ জন ইউপি সদস্য বলছেন, জেলেদের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে চাল বরাদ্দ এসেছেন কিনা তাদের কাছে তথ্য নেই।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, যারা বেঁধে দেয়া সময়ে ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকবে, কেবল তারাই এ সুবিধা পাবেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নগুলোতে চাল বরাদ্দ পেয়েছেন মৃত ব্যক্তি, অপেশাদার ও প্রবাসীরা।
তালিকায় থাকা ৪৫ জন জেলে ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিনিধি। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৬ জন মৃত ব্যক্তির পরিবার, ৪ জন প্রবাসী ও ১৭ জন যারা জেলে নয় এবং ১৮ জন জেলের সঙ্গে কথা হয়েছে।
তারা কয়েকজন বলছেন যে, আপনার কাছ থেকে শুনলাম যে চাল বরাদ্দ পাইছি। কিন্তু চাল তো পাইনি।
এরমধ্যে তালিকায় থাকা মৃত ব্যক্তিরা হলেন, আলোকবালী ইউনিয়নের মুরাদনগর এলাকার হাসেম মিয়া, হাবিজ মিয়া, আজি মিয়া ও বাখননগর এলাকার অছেদ মিয়া।
করিমপুর ইউনিয়নের করিমপুর এলাকার তোতা মিয়া, মাদবর আলী। প্রবাসে রয়েছেন, আলোকবালীর মুরাদনগর এলাকার আবদুল লতিব, বাখননগর এলাকার জামাল মিয়া। একই এলাকার ইউসুফ মিয়া ও বিল্লাল মিয়া।