
নিয়োগবিধি সংশোধন বেতন বৈষম্য নিরসন ও টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানসহ ৬ দফা দাবিতে রবিবার ( ০৫ অক্টোবর) পঞ্চম দিনের মতো নরসিংদীতে কর্মবিরতি পালন করে স্বাস্থ্য সহকারীরা।
বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন দাবি আদায় বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ ব্যানারে এ কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মবিরতির ফলে জেলার ১ হাজার ৭২৮টি অস্থায়ী টিকা দান কেন্দ্রের মধ্যে প্রতিদিন ২১৬ টি কেন্দ্রে থেকে প্রায় ৩ হাজার মা ও শিশু টিকা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
কর্মবিরতি চলাকালীন সময় জেলার ৬টি উপজেলায় কর্মরত ৩৫০ জন স্বাস্থ্য সহকারী ,সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত মনিপতাকা নিয়ে স্ব-স্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থান করছেন।
কর্মবিরতি পালনকারী স্বাস্থ্য সহকারীরা বলেন, ১৯৭৯ সালে ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচী (ইপিআই) কর্মসূচী চালু হওয়ার পর থেকে
মানব শিশু জন্মের পর থেকে ১০টি মারাত্মক সংক্রামিত রোগ থেকে সুরক্ষায় জন্য প্রতিশোধক হিসেবে তৃণমূল পর্যায় আমরা স্বাস্থ্য সহকারীরাই টিকা প্রদান করে আসছি।
এছাড়াও ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সের কিশোরী ও মহিলাদের ৫ ডোজ টিটি টিকা-প্রদান করেছি। আমাদের এ টিকা প্রদান করা কাজটি সম্পন্ন টেকনিক্যালধর্মী হলেও আমরা টেকনিক্যাল পদমর্যাদা থেকে বঞ্চিত।
স্বাস্থ্য সহকারীরা বলেন, আমাদের এ তৃণমূল স্বাস্থ্য সহকারীদের একক ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় দেশে থেকে গুটি বসন্ত নির্মূল, ম্যালিরিয়া রোগ, ধনুষ্টঙ্কার, অন্ধত্ব দূরিকরণসহ সংক্রামক-অসংক্রামক ব্যাধি রোগ নিয়ন্ত্রিত হয়।
আমরা শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যু হ্রাস, পোলিও নিমূর্ল তথা পোলিও মুক্ত বাংলাদেশ গঠনে বিশ্বব্যাপি সুনাম অর্জন করেছি। আমাদের কাজের অর্জনেই আজ বাংলাদেশ টিকাদানে বিশ্বের রোল মডেলে পরিনত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বাংলাদেশ যতটি পুরষ্কার পেয়েছেন তা একমাত্র স্বাস্থ্য সহকারীদের অবদান।
তার পরও সরকারের সকল কর্মচারি থেকে আমরা নানান বৈষম্য শিকার। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যারা গৃহপালিত প্রাণীর চিকিৎসা প্রদান করেন তারা আজ বেতন স্কেলসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা ১১তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন, সৃষ্টির সেবাজীব মানব শিশু স্বাস্থ্য ও মাতৃ স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার পরও তৃণমূল স্বাস্থ্য সহকারীদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি এখনো।
তারা আরও বলেন, আমাদের দাবি গুলো ন্যায় যৌক্তিক ১৯৯৮ সালের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাদের বেতন বৈষম্য নিরসনের ঘোষণা দিয়ে ছিলেন, ২০১৮ সালে তৎকালিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি এবং ২০২০ সালে স্বাস্থ্য সচিব ও মহাপরিচালক মহোদয় আমাদের দাবি সমূহ মেনে নিয়ে যে লিখিত সমঝোতা পত্রে স্বাক্ষর করেন কিন্তু অদ্যবধি আমরা তার কোন প্রতিফলন পায়নি।
যার ফলে পর্যায়ক্রমে আন্দোলন করা সত্ত্বেও এক একবার এক এক অজুহাতে কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে থামিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এবার আমরা সবাই অনড় অবস্থানে। আমরা বার বার শুধু কর্তৃপক্ষের আশার বাণীই শুনে যাচ্ছি।
এ বার আর আশার বাণীতে বিশ্বাসী নয়, বাস্তবায়ন চাই। আমাদের ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ার পর্যন্ত একজন্য স্বাস্থ্য সহাকারীও কর্মবিরতি থেকে ফিরবে না।