নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
প্রতিবেশি যুবলীগ নেতা শাহজাহান কবির ভিডব্লিউবির (পূর্বের ভিজিডি) একটি কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে রোজিনার কাছ থেকে ভোটার আইডি কার্ডের একটি ফটোকপি ও ছবি নেন।
এরপর কার্ড হলো কি হলো না জানতে পারেনি তিনি। কিন্তু ১৫ মাস পর জানতে পারে তার কার্ড (নং-৩৯) দিয়ে অন্য একজন চাল তুলে নিচ্ছেন। বিষয়টি জানতে পেরে মঙ্গলবার (২এপ্রিল) ইউপি ভবনে গিয়ে রোজিনা ১৫ মাসের সময় ঐ দিনেই প্রথম ৩০ কেজি চাল উত্তোলন করেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা কেউ কিছু বলতে রাজি হয়নি।
রোজিনা আক্তার (২৭) ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার দত্তপুর গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী। তার স্বামী অন্যের জমির কাজ করে আর সে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন আয়া পদে কাজ করে। যা আয়-রোজগার হয় তা দিয়ে দুই সন্তান ও শ্বশুড় শ্বাশুড়ি নিয়ে খেয়ে দিন পার করেন।
বুধবার দুপুরে প্রতিবেদকের কথা হয় রোজিনার সাথে। রোজিনা জানান- কার্ডের জন্য প্রতিবেশী শাহজাহান কবিরকে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ও ছবি দেন। কিছুদিন পর খোঁজ নিলে কার্ড হয়নি বলে জানান যুবলীগ নেতা।
পরে জানতে পারি গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৪ মাস আমার কার্ড দিয়ে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা কুলসুম আরা চাল তুলে নেন।
গত রবিবার কুলসুম আরা চাল তুলতে গিয়ে শনাক্ত করার সময় জালিয়াতি ধরে পড়ে ইউনিয়ন দফাদার আব্দুস সাত্তারের কাছে। বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যের জানালে রোজিনার কাছে কার্ড তুলে দেন।
মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা কুলসুম আরা বলেন, আমি কার্ড সম্পর্কে কিছু জানি না। ইউনিয়ন পরিষদে গেলে ঐ মহিলা বলছে আমাকে কার্ডটি ইস্যু করে দিতে। আমি সহযোগিতা করতে গেছিলাম। ১৪ মাস চাল তুলে খেয়েছেন কেন জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
জানতে চাইলে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাহজাহান কবির বলেন, রোজিনার কার্ডটি আমি করে দিয়েছি এটি সত্য তবে এতদিন রোজিনার কার্ডের চাল কে উত্তোলন করেছে তা বলতে পারবনা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তুলে নিয়েছি কেউ যদি সেটা বলে তা হলে বুঝবেন তারা আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ।
দফাদার আব্দুস সাত্তার কার্ড জব্দ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কার্ডের বিষয়ে অভিযোগ ছিল। সে পরিপ্রেক্ষিতে কুলসুম আরার কাছ থেকে কার্ড জব্দ করি।
মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাছলিমা আক্তার শিউলী বলেন, রোজিনার কার্ডটি কুলসুম আরা কাছে পেয়ে দফাদার আমাকে আমি কার্ড জব্দ করে প্রকৃত কার্ডধারী রোজিনার কাছে দিয়েছি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাশিদা রহমান বলেন, একজনের কার্ডের চাল অন্যজন কখনও তুলতে পারে না। যদি এমন হয়ে থাকে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।