নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় মুশুলী বাস স্ট্যান্ড থেকে তাড়াইল ভায়া কালিগঞ্জ বাজার সড়ক মেরামত ও প্রশস্তকরণ কাজের জন্য সড়কের পাশে থাকা পুরাতন ৫৬টি গাছ কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই কেটে ফেলা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের লোকজন বলছেন কাটার পর সেগুলো উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধমে বিক্রি করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহা সড়কের নান্দাইল উপজেলার মুশুলী চৌরাস্তা বাসস্ট্যান্ড হইতে তাড়াইল ভায়া কালিগঞ্জ বাজার সড়কটি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছিল।
সম্প্রতি প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ দশমিক ৯৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সড়কটির মেরামত ও প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হয়। গত ২৮ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী সড়কের দুপাশে থাকা রেলওয়ের ১ টি ছাড়া বাকি ৫৬টি গাছ কর্তন ও অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় বন কর্মকতাকে অনুরোধ করে একটি চিঠি দেন।
এ চিঠির প্রেক্ষিতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ ন ম আব্দুল ওয়াদুদ গত ৬ ফেব্রুয়ারি নান্দাইল বন বিভাগের (এসএফএনটিসি’র) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে একটি চিঠি দেন।
চিঠিতে সড়কের গাছগুলো বন বিভাগ কর্তৃক সৃজন করা হয়েছে কিনা সৃজিত হয়ে থাকলে গাছগুলো মার্কিং তালিকা সংশ্লিষ্ট সহকারি বন সংরক্ষক ময়মনসিংহ বন বিভাগের মাধ্যমে দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু এরপর পরই গাছ কাটা শুরু হয়ে যায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় সড়কের দুপাশে থাকা প্রায় সকল গাছই ইতিমধ্যে কেটে অপসারণ করা হয়ে গেছে। পল্লীবিদ্যূৎ সাব-স্টেশনের কাছাকাছি ইতিপূর্বে ডালপাল কেটে ফেলা একটি মেহগনি ও একটি জামগাছের গোড়া কাটার কাজ চলছে।
মহাসড়কের পশ্চিমপাশে অবস্থিত একটি স’ মিলে বেশ কয়েকটি গাছের গোড়া (কান্ড) জড়ো করে রাখা হয়েছে। ডালপালা রাখা হয়েছে অন্য আরেক জায়গায়। স্থানীয়রা জানান,টেন্ডার ছাড়া গাছগুলি কাটা মোটেও উচিত হয়নি।
এভাবে কাটা গাছ বা গাছের যে কোন অংশ বেহাত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। কিছু ডালপালা লোকজন নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ তাদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইলে কর্মরত বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাদিউল ইসলাম জানান, সড়কের কাজ দ্রত শুরু করার চাপে পড়ে টেন্ডার ছাড়াই গাছগুলো কাটতে হচ্ছে। তবে তারা গাছগুলোতে নাম্বার দিয়ে এক জায়গায় সংরক্ষণ করে রেখেছেন। উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ি পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ ন ম আব্দুল ওয়াদুদ জানান, উপজেলা প্রকৌশলীর অনুরোধে টেন্ডার ছাড়াই গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে অচিরেই টেন্ডারের মাধ্যমে সেগুলো বিক্রির ব্যবস্থা করবেন।
গাছগুলো স’ মিলে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, কোন মিলে সরকারি গাছ রাখার কোন সুযোগ নেই। গাছের ডালপালা নিয়ে যাবার প্রসঙ্গে তিনি জানান,উপকার ভোগীরা কিছু নিলে নিতেও পারে।
নান্দাইল উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী শাহাবো রহমান সজিব জানান, তিনি একমাস পূর্বে চিঠি দিয়েছেন, বন বিভাগ কেন টেন্ডার দেয়নি সেটি তারাই ভালো বলতে পারবেন।