লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কটুক্তি ও মিথ্যা তথ্য প্রকাশের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায়ের অসন্তুষ্ট প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
প্রয়াত ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম আনোয়ারুল ইসলাম (নাজু স্যার) । তিনি পাটগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে পাটগ্রাম তাহেরা বিদ্যাপীঠ স্কুলে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য পাঠ করেন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল ইসলাম নাজুর ছেলে ও তাহেরা বিদ্যাপীঠ স্কুলের প্রশাসক মোহাম্মাদ শোয়ায়েবুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, আমার বাবা পাটগ্রাম উপজেলার সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব, পাটগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ২৮ বছরের সাবেক সভাপতি প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কটূক্তি ও মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেন উপজেলার স্ব -ঘোষিত মুক্তিযোদ্ধা গবেষক সায়েদুল ইসলাম মিঠু।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে ঐ সময় উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মাদ শোয়ায়েবুল ইসলাম ওই ঘটনার প্রতিবাদে পাটগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করি।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ পুলিশ এর সাইবার টিম দীর্ঘ প্রায় ২ (দুই) বছর তদন্ত শেষে ঘটনাটি সত্য বলে লিখিত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে এবং পাটগ্রাম থানায় রাষ্ট্রপক্ষ বাদী হয়ে সাইবার ট্রাইবুনাল (রংপুর) এ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ২৫ (২) ২৯ (১) ধারায় অভিযোগ গঠন করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মোহাম্মাদ শোয়ায়েবুল ইসলাম বলেন,মামলাটির সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইবুনাল (রংপুর) গত ০৮ জুলাই তারিখে রায় প্রদান করেন।
উক্ত রায়ে বিজ্ঞ আদালত বলেন যে, আসামী সায়েদুল ইসলাম মিঠু বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামীকে দোষী সাব্যস্তক্রমে ২৫ (২) এবং ২৯ (১) প্রত্যেক ধারায় সাত দিন বিনাশ্রম কারাদন্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে এক দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ করেন। রায় ঘোষণার পর আসামী সায়েদুল ইসলাম মিঠুকে হাতকড়া পড়িয়ে জেলা হাজতে পাঠানো হয়।
পরবর্তীতে আসামী সায়েদুল ইসলাম মিঠু আদালতে ৪২৬ ধারায় ৫ হাজার টাকা বন্ড প্রদান করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন এই শর্তে জামিন গ্রহণ করেন। আমরা বাদি পক্ষ এই রায়ের সন্তুষ্ট নই এবং অতি শীঘ্রই উচ্চ আদালতের সাজাবৃদ্ধি জন্য আপিল করবে বলে জানান তিনি।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এইচ এম সালাউজ্জামান ফারুক , বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোশাররফ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জাকির হোসেন, তাহেরা বিদ্যাপীঠের পরিচালক মণ্ডলির সদস্য রতন কুমার সাহা, মোঃ আহসান হাবীব স্বপন, অধ্যক্ষ মোঃ আহসান উল হাবিব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দফতর সম্পাদক ও সহকারী শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সাদ্দামসহ অত্র বিদ্যাপীঠের সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ।
তাহেরা বিদ্যাপীঠে স্কুলে প্রশাসক মোহাম্মাদ শোয়ায়েবুল ইসলাম বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর পর থেকে এই তাহেরা বিদ্যাপীঠ স্কুল নিয়ে গভীরভাবে ষড়যন্ত্র করেছিল একটি মহল।
এ বিষয়ে সায়েদুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন খারাপ মন্তব্য করিনি। শুধু বলেছি তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন। তার নামও প্রকাশ করিনি। তারপরও রংপুর বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আমাকে ৭ দিনের দ্বন্দ্ব দিয়েছেন।আমি উচ্চ আদালতে এ বিষয়ে আপিল করব।’