বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডারের সংগঠন ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ এর উদ্যোগে সারা দেশের ন্যায় বৃহস্পতিবার ফুলপুর উপজেলায় মাননববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত উপসচিব পুলে কোটা পদ্ধতি বহাল, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে সিভিল সার্ভিসের বহির্ভূতকরণের প্রতিবাদ এবং কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ মানববন্ধনে প্রশাসন ক্যাডার ব্যতীত উপজেলায় কর্মরত অন্যান্য বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ অংশ নেয়।
এর পূর্বে মঙ্গলবার সারাদেশের মতো তারাও সকাল ১১ টা থেকে ১ ঘন্টা কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করেছে।
কর্মকর্তারা জানান, উপসচিব পুল কোনো বিশেষ ক্যাডারের পদ নয়। এটি সরকারের নিজস্ব পদ। সার্ভিস অ্যাক্ট ১৯৭৫ অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে সিভিল সার্ভিসের সকল ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকে উপসচিব ও তদুর্ধ্ব পদে নিয়োগের কথা থাকলেও বিভিন্ন অপকৌশল ও অজুহাতে এ সকল পদে নিজেদের জন্য কোটা পদ্ধতি চালু রেখেছে প্রশাসন ক্যাডার।
২০১৮ এর নির্বাচনের পর সার্ভিস অ্যাক্ট ১৯৭৫ রহিত করা হয়। এছাড়া ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ২০ ফেব্রুয়ারি এ সকল পদ নিজেদের তফসিলে বসিয়ে নিয়েছে প্রশাসন ক্যাডার।
এরূপ কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসকে ভারসাম্যহীন ও অকার্যকর করার মাধ্যমে দেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে গভীর ষড়যন্ত্র ও মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির নামান্তর।
জনপ্রশাসনের উচ্চস্তরে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা থাকেন বিধায় বিভিন্ন সময়ে জনকল্যাণমুখী বিধির পরিবর্তে নিজেদের ইচ্ছে মত বিভিন্ন সময়ে চাকরি বিধিমালা তৈরি করে নিচ্ছে।
সরকারের স্পর্শকাতর সময়ে তারা একেকটা সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে। কিন্তু অন্যান্য ক্যাডারের পদোন্নতি, পদায়ন, সুযোগ সুবিধা রুদ্ধ করে দিচ্ছে। এর ফলে অন্যান্য ক্যাডারে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
প্রফেশনাল মন্ত্রণালয়ে আন-প্রফেশনাল কর্মকর্তারা চাকরি করায় টেকনিক্যাল কাজে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অপরিপক্বতা এবং কিছু কিছু সময় বিপরীত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে। তাই তারা ক্যাডার ভিত্তিক মন্ত্রণালয় দাবি করেন, যেখানে সকল কর্মকর্তা ওই ক্যাডারের হবেন।
একই সঙ্গে ক্যাডারের উচ্চ পদগুলোতে পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সকল ক্যাডারে প্রয়োজনীয় সুপার নিউমারি পদ তৈরির দাবি করেন।
মানববন্ধনে উল্লেখ করা হয় যে, বিধিমালা লঙ্ঘন করে একটা ক্যাডার উপসচিব পদে ৭৫ শতাংশ পদোন্নতি পাচ্ছে আর ২৫টি ক্যাডার পাচ্ছে ২৫ শতাংশ। এটা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
এ ধারা উপসচিব থেকে যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পর্যায়েও বিরাজমান রয়েছে।
মানববন্ধনে কর্মকর্তারা বলেন, উপসচিব কোনো ক্যাডারের জন্য নির্ধারিত পদ নয়। সুতরাং পরিপত্র জারি করে এ ধরনের সুবিধা গ্রহণ আইনসম্মত হতে পারে না।
মেধাবী জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার আহ্বান জানানো এ সময়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার, ফারুক আহাম্মেদ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ তারেক আহমেদ , উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ আশরাফুল আলম সিয়াম, ডাঃ এরশাদ ফরায়েজী, ডাঃ রেবেকা সুলতানা, ডাঃ অনুপম কুমার দাস, ডাঃ মাহমুদুল হাসান মাসুম, ডাঃ সবুজ শিকদার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কামরুল হাসান কামু, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আল আমিন প্রমুখ।