ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ভাইটকান্দি সখল্যা মোড় এলাকা থেকে ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী রায়হানের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করছে ফুলপুর থানার পুলিশ।
গতকাল (১৬ জুন) সোমবার রাত ১১ টার সময় টয়লেট সেফটি ট্যাংক থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত রায়হান উপজেলার ছনধরা ইউনিয়নের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের সন্তান। পরিবারের দাবি প্রেম করার অপরাধে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
ফুলপুর থানা ও পরিবার সুত্রে জানা যায়, ভাইটকান্দি স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র রায়হান গত (১৩ জুন) রাত ১১টা হতে নিখোঁজ হয়। অনেক খোজাখুজির পর ছেলেকে না পেয়ে গত (১৫ জুন) রবিবার রায়হানের বড় ভাই মামুন ফুলপুর থানায় থানায় জিডি করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্কুল ছাত্র রায়হানের সাথে প্রতিবেশী শেখ ফরিদের মেয়ে একই ক্লাসে পড়ার সুবাদে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের গভীর সম্পর্কের কথা মেয়ের পরিবার জানতে পেরে রায়হানের উপর ক্ষেপে যায়।
গত ১৫ জানুয়ারি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করার অপরাধে মেয়ের বাবা শেখ ফরিদ (ফালান) প্রতিবেশী হাতেম আলীর ছেলে মুনজুরুল ও মেয়ের ভাই সাগর ছেলেকে আটকিয়ে মারধর করে এবং মেয়ের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ নিষেধ করেন।
তবে মারধরের ঘটনা রায়হান তার পরিবার কে জানিয়ে দেন। এ ঘটনায় রায়হানের মা জোছনা খাতুন গত জানুয়ারি মাসেই ফুলপুর থানায় একটা অভিযোগ দায়ের করেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১১ টার সময় সখল্যা মোড় এলাকার আব্দুস সোবানের বাড়ির পাশে টয়লেট সেফটি ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।এ সময় স্থানীয়রা সেফটি ট্যাংকে অর্ধগলিত লাশ দেখে ফুলপুর থানার পুলিশকে খবর দেন।
ঘটনাস্থলে ফুলপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাকসুদুর রহমান,ওসি মো. আব্দুল হাদিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরেজমিনে উপস্থিত হন।
এ সময় উদ্ধার হওয়া মরদেহটি তিন ধরে নিখোঁজ হওয়া স্থানীয় স্কুল ছাত্র রায়হানের বলে জানতে পারে পুলিশ। মেধাবী ছাত্র রায়হানের লাশ পাওয়া পর এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের ঘটনা ঘটে। এ সময় মা জোছনা খাতুন বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরিবারের সদস্যরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
রায়হানকে নৃশংসভাবে যারা হত্যা করছে তাদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও রাস্তা বন্ধ করে রাখেন স্থানীয়রা। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপের কথা জানালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, রায়হান নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই মেয়ের পরিবার ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত মারধর করা মেয়ের বাবা শেখ ফরিদ ভাই সাগর সহ মারধরের সাথে জড়িত সবাই পলাতক রয়েছে।
ফুলপুর থানার ওসি মো.আব্দুল হাদি বলেন, উদ্ধার হওয়া মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত সময়ে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।