
ময়মনসিংহের ফুলপুরে ঈদুল আজহার দিন ভোর রাতে ফুলপুর-শেরপুর মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় সেই মোতালেবের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন উপজেলা প্রশাসন।
শেরপুর – ঝিনাইগাতি থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পলি পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো -ব ১২-১১৪২) উল্টো পথে অটোচালক নওমুসলিম আব্দুল মোতালেবের অটোর উপরে উঠিয়ে দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান আব্দুল মোতালেব। আব্দুল মোতালেব ভাইটকান্দি থেকে অটোরিকশা নিয়ে ফুলপুরে ফেরার সময় এ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
জানা যায়, আব্দুল মোতালেব একজন নওমুসলিম। ফুলপুর পৌরসভার গোদারিয়া গ্রামের গগন চন্দ্র সরকার ও অঞ্জলি রানী সরকারের পুত্র ছিলেন। গোদারিয়া গ্রামের মজনু মিয়ার কন্যা পারভীনের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। প্রেমীককে বিয়ে করতে নিজের ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন।
সেই থেকে নিয়মিত নামাজ ও তাবলীগের দিকে তার ছিল পথচলা। ঈদের দিন ভোর রাতে ফোনে স্ত্রীকে বলেন, সকালে সেমাই খেয়ে ঈদের নামাজ পড়বেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পড়েই স্বামীর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার খবর পেলেন হতভাগ্য স্ত্রী।
জানা যায়, ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর নিজ পিতা মাতার সম্পদ থেকে বঞ্চিত হয়ে গোদারিয়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। প্রান্তি (১৮) ওলীউল্লাহ (১৫) ও মীম (১৩) নামের তিন সন্তানের জনক তিনি।
জানা যায়, তিন সন্তানের লেখাপড়া ও সংসার চালাতে একমাত্র মোতালেব ছিলেন উপার্জকারী ব্যাক্তি। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারটির অসহায়ত্বের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরা হলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী তুলে দিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও পৌর প্রশাসক মেহেদী হাসান ফারুক।
আজ (১০ জুন) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোদারিয়া বাড়িতে অসহায় পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন তিনি।
এ সময় তিন সন্তান ও স্ত্রীকে সান্ত্বনা দেন। সহকারী কমিশনার ভূমি মেহেদী হাসান ফারুক বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে তাদের কে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম সীমা বলেন, সরকারি ভাবে আর্থিক অনুদান ও একটি বসত ঘরের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। ছেলে -মেয়েদের লেখা-পড়া করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।