২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি| দুপুর ১:৫৩| শীতকাল|

বহিষ্কারের আদেশ মানছে না নোবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতা সৌরভ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪,
  • 604 Time View

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ২০২০-২১ সেশনের সমাজবিজ্ঞন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা মৃন্ময় কৃষ্ণ সাহা (সৌরভ সাহা) প্রশাসনের দুর্বলতায় আধিপত্য চালিয়ে চার বছরের বহিষ্কার থাকা সত্বেও এক সেমিস্টার ছাড়া প্রতিটি সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষায় নিয়মিত অংশ গ্রহণ করেছেন তিনি।

বান্ধবীকে গাঁজা সেবনের ভিডিও পাঠানোকে কেন্দ্র করে ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর নোবিপ্রবির ভাষা শহীদ আবদুল সালাম হল ভাঙচুরের ঘটনায় তাকে তিন বছরের জন্য বহিষ্কার ও বিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২ নভেম্বর বিশ্বলবিদ্যালয়ের উপাসনালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার দায়ে আবারও এক বছরের জন্য আবারও বহিষ্কার করা হয় তাকে।
২০২৬ সাল পর্যন্ত চার বছরের বহিষ্কার আদেশ থাকার পরেও পরীক্ষায় বসার অনুমতি প্রসঙ্গে নোবিপ্রবির উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. সফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিন বছরের বহিষ্কার আদেশ যেটা ছিল সেটার জন্য সাবেক উপাচার্য স্যার থেকে পরীক্ষার অনুমতিপত্র আনলে আমরা তাকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিই। অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এমন কোনো অনুমতিপত্র দেখাতে পারেনি।

পরবর্তীতে আবারও এক বছরের দেওয়া বহিষ্কারের শাস্তি সম্পর্কে জানা যায়, বিভাগীয় চেয়ারম্যান (সাবেক) অধ্যাপক ড. মো. রোকনুজ্জামানের অনুরোধে একাডেমিক কাউন্সিলে তা কমিয়ে ছয় মাস করা হয়।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী অধ্যাপক শাহনাজ আক্তার বলেন, যেহেতু নতুন প্রশাসন আর আমিও আগে চেয়ারম্যান ছিলাম না সেহেতু আমার মনে হয় এ বিষয়গুলো নিয়ে পুনরায় তদন্ত করা দরকার।

নোবিপ্রবি প্রক্টর এ. এফ. এম আরিফুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও তার বিভাগের কোর্স কোর্ডিনেটরসহ ব্যাপারটা নিয়ে আইন বিরুদ্ধ কাজ করেছে। কারন একজন কোর্স কোর্ডিনেটর একজন ছাত্রের কোর্স রেজিস্ট্রেশনের সময় স্বাক্ষর করে। ওনার কাছে নিশ্চয় বহিষ্কারের চিঠিগুলো আসার কথা। সে সব জানার কথা।

চার বছরের বহিষ্কার আদেশ থাকা সত্ত্বেও কিভাবে একটি সেমিস্টার ছাড়া বাকি সব পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে বহিষ্কৃত মৃন্ময় কৃষ্ণ সাহা বলেন, আমাকে যে প্রথমে তিন বছরের বহিষ্কার দেওয়া হয়েছিল এটা ভুল কথা। পরে তা সংশোধন করে এক বছরের দেওয়া হয়। এই এক বছরও প্রশাসনিকভাবে কমিয়ে ছয় মাস করা হয় এবং এটার শাস্তি হিসেবে আমি সম্পূর্ণ একটা সেমিস্টার (বর্ষ-১ টার্ম -২) পরীক্ষায় সে বসতে পারেনি।

একটি সেমিস্টার না দিয়ে কিভাবে আবার নিজের ব্যাচের সঙ্গে নিয়মিত পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যান এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এটা প্রশাসনিকভাবে হয়েছে কোন রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে না।

কোনো শিক্ষার্থী তার একটি সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ না করলে তাকে পরবর্তীতে তার জুনিয়র ব্যাচের সঙ্গে একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হয়।

উল্লেখ্য, মৃন্ময় কৃষ্ণ সাহা নোবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান শুভর অনুসারী ও নোবিপ্রবি ভাষা শহীদ আবদুল সালাম হল শাখা ছাত্রলীগের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক। আবাসিক হল ভাংচুর, মাদক সেবন, বহিষ্কার, নিজ ব্যাচের জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মানসিক নিপীড়ন, সিনিয়রদের হুমকি ও অপমান, শিক্ষকদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরন, ধমীর্য় অনুভূতীতে আঘাত করে ফেসবুকে পোস্ট করা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতা ও এ আন্দোলনে যুক্ত থাকা জুনিয়র শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে গত ১০ সেপ্টেম্বর তার বিভাগের সহপাঠীরা তাকে ব্যাচের সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম ও যাবতীয় পরীক্ষা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। পরবতীর্তে ১৫ সেপ্টেম্বর সে তার চলমান চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করলে সে কোর্সের খাতা ম্যূায়ন স্থগিত করতে তার ব্যাচের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন জানায়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরি অন্যান্য নিউজ