ভারতের সিকিম রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত ও লোনাক হ্রদ ভেঙে উজানের ঢলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়ন হয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী ফুঁসে উঠেছে। প্রবল ঘোলা পানির স্রোতে নদী অববাহিকার প্রায় ৫ টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। কয়েক শত পরিবার পানিবন্দী এবং তিন শত হেক্টর আমন খেত পানিতে তলিয়ে নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বুধবার (০৪ অক্টোবর) দুপুর থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পায় দুই ঘন্টা স্থিতিবস্থা থাকে এবং সন্ধা ৭ টা হতে পানি কমতে শুরু করেছে।
এর আগে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বন্যার আশঙ্কায় তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাসহ উপজেলার সকল বাসিন্দাদের বন্যার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে মাইকে প্রচার চালানো হয়।
তিস্তা নদী ও বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেছেন- পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলাম ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) উত্তম কুমার নন্দী।
জানা গেছে, সিকিম রাজ্যে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ভারতের কোচবিহার রাজ্যের জলপাইগুড়ি জেলা হয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাংলাদেশের এ ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে ফসলি খেত, বসতভিটা-বাড়ি পানিতে তলিয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, তিস্তা নদী হয়ে আসা ঘোলা পানির বন্যায় দহগ্রামের মুন্সিপাড়া, কাতিপাড়া, সৈয়দপাড়া, মহিমপাড়া, গুচ্ছগ্রাম এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মিলন বলেন, ‘উজানে বৃষ্টি হলেই আমাদের এখানে পানি বাড়ে। বন্যা দেখা দেয়। এতে আমাদের ঘর-বাড়িতে পানি উঠে। ধান খেত তলিয়ে নষ্ট হয়। তিস্তা নদীতে বেড়িবাঁধ হলে আমাদের বসতবাড়ি ও ফসল রক্ষা পেত।’
পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল গাফ্ফার বলেন, ‘বন্যায় দহগ্রামের প্রায় তিন শত হেক্টর আমন খেত নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। প্লাবিত আমন খেত দেখে আসা হয়েছে। তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
পাটগ্রাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) উত্তম কুমার নন্দী জানান, ‘ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে বন্যার আগাম প্রস্ততি হিসেবে ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।’