নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউটের মেধাবী ছাত্রী সামিয়া আলম আনিকার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে তারা এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে নিহত আনিকার মা সাবিকুন নাহার ডেইজি, বিদ্যালয়ের তত্বাবধায়ক মো. হামিদুল হক, শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, শিক্ষার্থী মো. আতিকুর রহমান, মোসা. ফাতেমা আক্তার বক্তব্য রাখেন। এসময় প্রায় দুই শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
আনিকার মা বলেন, আনিকাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় একমাস আগে হত্যাকান্ড ঘটলেও এখনো আমরা বিচারের কোনো অগ্রগতি দেখছি না। হত্যার সাথে জড়িত শাহরিয়ার শাহজাহান ফারদিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিসহ এইভাবে আর কোন মায়ের বুক যেন খালি না হয় তার আকুতি জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর দুপুরে মনোহরদী পৌর শহরের সরকারী কলেজ সংলগ্ন আব্দুস সাত্তার মাস্টারের বাসায় হত্যাকান্ড ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনিকার খালোতো বোন অর্পার সঙ্গে পরিচয় হয় মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার শাহজাহান কিবরিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী শাহরিয়ার শাহজাহান ফারদিনের।
অর্পাকে তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য অনেকদিন ধরে মুঠোফোনে তাঁর মাকে অনুরোধ করেন। কিন্তু অর্পার মা পাপিয়া আক্তার বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না।
৪ নভেম্বর সকাল ১১ টার দিকে কুলাউড়া থেকে মনোহরদী অর্পার বাসায় আসে শাহরিয়ার শাহজাহান ফারদিন। ওই সময় অর্পা বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং ক্লাস করতে নরসিংদী ছিলেন। বাসায় ছিলেন অর্পার মা পাপিয়া এবং খালাতো বোন সামিয়া আলম আনিকা।
দুপুরে রান্না করে ফারদিনকে খাওয়া-দাওয়া করানো হয়। পরে বিশ্রাম শেষে পৌনে ৪ টার দিকে অর্পাকে বিয়ে দেওয়ার বিষয়ে মায়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ফারদিনের। এক পর্যায়ে ফারদিনের ব্যাগে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে পাপিয়াকে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে।
তাঁর চিৎকার শুনে পাশের কক্ষে থাকা আনিকা তার খালাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে। এসময় তাঁকেও উপর্যুপরি কোপানো হয়। গলায় কেটে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই আনিকার মৃত্যু হয়।
পরে পাপিয়া বাসা থেকে বের হয়ে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে।
এসময় হত্যাকারী ফারদিন পালিয়ে যায়। পরে পাপিয়াকে উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।