নিজস্ব প্রতিবেদক:
বুধবার (০৭ জুন) মারা যান শামীমা বেগম (৬০) নামের এক বৃদ্ধা। তবে তার লাশ দাফন না করে মৃতদেহকে ঘরে রেখেই বসবাস করছেন পরিবারের সদস্যরা। ওই পরিবারে শিশুরাও ছিল। পাঁচ দিন পর ওই ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে ঘর থেকে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করে।
এমন ঘটনা ঘটেছে নরসিংদীর মনোহরদীতে। আজ শনিবার মনোহরদী বাজার সংলগ্ন ওই বাড়ি থেকে শামীমা আক্তার নাজমার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এ সময় স্বামী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোক্তার হোসেন তালুকদার (৭০) এবং তার চার মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃত চার মেয়ে হলেন রিমি আক্তার (৩৫), সুমি আক্তার (৩০) জনি (২৪) এবং নিশাত (১৮)। এদের মধ্যে বড় মেয়ে রিমি আক্তার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
নিহতের স্বজনরা জানান, ওই পরিবারের সদস্যরা এক ভণ্ড পীরের মুরিদ। পীরের নির্দেশে তারা সবাই ২০২০ সাল থেকে এক ঘরে থাকতেন।
প্রয়োজন ছাড়া পরিবারের সদস্যরা বাহিরে বের হতেন না। এমনকি প্রতিবেশী বা স্বজনদের সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক ছিল না।
নিহতের স্বামী মোক্তার হোসেন তালুকদার বলেন, আমার স্ত্রী ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। গত বুধবার বিকেলে অসুস্থতা বেড়ে গেলে তিনি মারা যান।
তিনি আরো বলেন, আমার স্ত্রী ও চার মেয়ে এক পীরের মুরিদ ছিলেন।
মৃত্যুর আগে সে (শামীমা) বলছিল মারা গেলে তাকে কবরস্থ না করতে, সে নাকি চারদিন পর আবার জীবিত হবে। এই বিশ্বাসে আমার মেয়েরা তার মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রাখে। তাদের ভয়ে আমিও কাউকে কিছু বলতে পারিনি।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি কেন গোপন রাখা হয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
নিহতের স্বামী ও চার মেয়েকে আটক করে চিকিৎসার জন্য মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।