২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| ১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি| বিকাল ৩:০৯| হেমন্তকাল|
শিরোনাম:
রাণীশংকৈলে ডিএমআইই পদ্ধতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত তারেক জিয়া সাইবার ফোর্স নরসিংদী জেলা শাখার কমিটি গঠন স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে এদেশের মানুষ আপোষ করতে পারে না- মির্জা ফখরুল পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের ছররা গুলিতে তিন বাংলাদেশি আহত নান্দাইলে ধানের শীষের ভোট চেয়ে ছাত্রদলের নেতৃত্বে প্রচারণা মিছিল ভোলায় মানবতার বন্ধনের উদ্যোগে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রভাব শীর্ষক আলোচনা সভা নান্দাইলে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ধানের শীষের মিছিল কপিলমুনি ব্লাড ব্যাংকের সভাপতি রাজ, সম্পাদক রনি কুড়িগ্রাম-২ আসনে গণসংযোগ করছেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী নূর বখ্ত মিয়া অবহেলিত পাইকগাছা-কয়রাকে রোল মডেল করতে চান  বিএনপি প্রার্থী বাপ্পী

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় মাকসুদা

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি:
  • Update Time : সোমবার, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫,
  • 83 Time View

দরিদ্র পরিবারের সন্তান মাকসুদা আল বারী মিম মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও ভর্তি খরচ ও পড়াশোনা এগিয়ে নিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে তার পরিবার।

মাকসুদার বাবা মিজানুর রহমান পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা আরিফা আক্তার রিনা কখনও কখনও অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। ভর্তির বিষয়ে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন মেধাবী মাকসুদা ও তার পরিবার।

মাকসুদার বাড়ি লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামে। তিন বোনের মধ্যে মাকসুদা বড়। সে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

পরীক্ষার ফলাফলে মেধাতালিকায় ৩ হাজার ৩১১তম হয়ে সুযোগ এসেছে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার। তবে সেখানে ভর্তি ও পড়াশোনার সার্বিক খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবারটি।

মাকসুদা আল বারী মিম ২০২২ সালে লালমনিরহাট সদরের মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০২৪ সালে একই ইউনিয়নের দুড়ারকুঠি বেগম কামরুননেছা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

স্কুল ও কলেজের শিক্ষকেরা তাঁর কাছে বেতন ও টিউশন ফি নিতেন না। এর পাশাপাশি নবম শ্রেণির ছাত্রী থাকার সময় থেকেই অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অঙ্ক, ইংরেজিসহ বিজ্ঞান বিষয়ে টিউশনি করিয়েছেন বলে জানান মাকসুদা।

মাকসুদার বাবা কখনো রাজমিস্ত্রি, কখনো কৃষিকাজ করেন। ৮ শতকের বসতভিটা আর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১১ শতাংশ জমি নিজের স্থাবর সম্পত্তি বলতে এটুকুই।

একটি দুধেল গাইসহ বাছুর আছে। এটির দুধ বিক্রি করে ও বর্গা নেওয়া দুই বিঘা জমিতে আবাদ করে টেনেটুনে সংসার চালান মিজানুর ও আরিফা দম্পতি।

মাকসুদার ছোট বোন মারিয়াতুন আল বারী মেঘনা লালমনিরহাট শহরের মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। আর ছোট বোন মাহমুদা আল বারী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে।

মাকসুদার বাবা মিজানুর রহমান বলেন, তিনি মেয়েদের পড়াশোনার খরচ দিতে পারেন না। তিন বোনের মধ্যে মাকসুদা ও আরেক মেয়ে টিউশনি করে সবার পড়ার খরচ জোগার করেন।

এখন মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন মাকসুদা। তাঁকে কীভাবে সেখানে ভর্তি করাবেন ও পড়ার খরচ দেবেন, এসব চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারছেন না।

মাকসুদা আল বারী মিম বলেন, ছোট বেলা থেকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। অনেক বাধা পেরিয়ে এই পর্যন্ত এসেছি। আমার বাবা রাজ মিস্ত্রির কাজ করেন আর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান।

আমার ছোট বোন মারিয়াতুন আল বারী মেঘনা লালমনিরহাট শহরের মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। আমি আর আমার বোন প্রাইভেট পড়িয়ে চলি।

মাকসুদা আরো বলেন, টিউশনি করে এতদিন নিজের খরচ চালিয়েছি। কিন্তু মেডিকেলে পড়ার খরচ জুটবে কীভাবে? আমার সাথে বাবা-মা দুশ্চিন্তায় আছেন।

মাকসুদার সাফল্যে প্রতিবেশী আঃ সামাদ বলেন, মাকসুদা ছোট থেকেই কষ্ট করে পড়ালেখা করছে। সে সুযোগ পেয়েছে এজন্য আমাদের এলাকারও সুনাম হচ্ছে। আমরা চাই সে আরও ভালো করুক সামনে।

ফুলগাছ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান আলী বলেন, মাকসুদা মেধাবী শিক্ষার্থী। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সে তার মেধার প্রমাণ দিয়েছে। কিন্তু তার পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র।

সমাজের সামর্থবানরা এগিয়ে আসলে মাকসুদা তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। একদিন চিকিৎসক হয়ে দেশের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে পারবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরি অন্যান্য নিউজ