৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| ১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি| রাত ৩:৪৪| হেমন্তকাল|
শিরোনাম:
পাইকগাছায় তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত শিক্ষা ক্যাডারের পদোন্নতিবঞ্চিত প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির দাবীতে মানববন্ধন পাইকগাছায় নারী স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে দুর্যোগ প্রতিরোধক সরঞ্জাম বিতরণ গফরগাঁওয়ে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ফাত্তাহ খানের জনসমাবেশ চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা কৃষকরাই দেশের মূল চালিকা শক্তি- জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসাইন শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়কে স্বাগত জানিয়ে পাইকগাছায় বিএনপির আনন্দ মিছিল জামিনে বের হয়ে বাদীকে হত্যার হুমকির অভিযোগ শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে গফরগাঁওয়ে বিএনপির আনন্দ মিছিল ত্রিশালে সোনার বাংলা ইটভাটা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

মোংলা ইপিজেডের ভারতীয় কোম্পানির ১৮০০ শ্রমিক ছাঁটাই, বিক্ষোভে পুলিশের লাঠিপেটা–টিয়ারশেল নিক্ষেপ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, মার্চ ২৫, ২০২৪,
  • 172 Time View

ফাহাদ, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:

বাগেরহাটের মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) ভারতীয় কোম্পানি ভিআইপি লাগেজ ফ্যাক্টরিতে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় পুলিশ ও ইপিজেডের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং সংঘর্ষ হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত মোংলা ইপিজেডের গেটে এ ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিপেটা ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। এতে অন্তত ৩০ জন শ্রমিক আহত এবং আটজন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে বলে দাবি শ্রমিকদের।

এর আগে, ভিআইপি লাগেজ ফ্যাক্টরির শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে আজ সকাল থেকেই ফ্যাক্টরির সামনে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। একপর্যায়ে ইপিজেড ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় কারখানা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছোড়ে এবং লাঠিপেটা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভকালে পুলিশ শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করলে সকাল সাড়ে ১১টার পর বেপজা সিকিউরিটি ও পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় অন্তত ৩০ জন শ্রমিক আহত হন।

শ্রমিকেরা জানান, ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ভিআইপির সাতটি প্ল্যান্টের প্রায় ১ হাজার ৮০০ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। আজ সকালে কাজে এসে এমন খবর শুনে তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। প্রতিষ্ঠানটির সাতটি প্ল্যান্টের সামনে অবস্থান নিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে সেখান থেকে ইপিজেডের প্রধান ফটকে গেলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের আটকে দেয়।

সেখানে বের হতে না পেরে শ্রমিকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
ওই কারখানার শ্রমিক তানিয়া বলেন, ‘আমরা বেতন পাইনি। আবার কাজ থেকে বাদও দিয়ে দিছে। না পাওয়ার করণে আমরা আন্দোলন করছি। কিন্তু আমাগো পরে হামলা করিছে। আমাগো পরেই বেশি হিংস্র হয়ে হামলা করছে। ৩০ জনের বেশি শ্রমিক আহত হইছে। আরও কে কোথায় গেছে তা কতি পারি না।’

শ্রমিক বায়েজিদ বলেন, ‘আট মাস ধরে এই কোম্পানিতে রয়েছি। কোনো নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ করে আমাদের বের করে দিয়েছে। কী করব, এখন সামনে ঈদ।’

সুবর্ণা নামের আরেক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা মূলত অন্য ফ্যাক্টরিতে কাজ করতাম। ভালো বেতন এবং সুযোগ–সুবিধা দেওয়ার কথা বলে আমাদের এই ফ্যাক্টরিতে এনেছে। এখন ঈদের আগে আমাদের বের করে দিয়েছে। কোথায় যাব, কী করব, না খেয়ে মরতে হবে আমাদের। এ ছাড়া পুলিশ ও আনসারদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ ভাই–বোন আহত হয়েছেন। সুরাইয়া আক্তার নামের একজনের অবস্থা গুরুতর। প্রায় আটজনকে পুলিশ আটক করেছে।

মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত, শ্রমিকেরা ইপিজেড ফটক ছেড়ে চলে গেছে। এর আগে কারখানা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।’

বিক্ষোভের সূত্রপাত সম্পর্কে ওসি বলেন, ‘মূলত সকাল ৯টা থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়। ইপিজেডের ভিআইপি লাগেজ ফ্যাক্টরি আজ রোববার তাদের প্রায় ১ হাজার ৮০০ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। গতকাল সিদ্ধান্ত নিয়ে আজই তারা ছাঁটাই কার্যকর করেছে। প্রতিষ্ঠানটি (ভিআইপি লাগেজ) বলছে, তারা নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের এক মাসের বেতন, ভাতা ও বোনাস দিয়েছে। তবে শ্রমিকেরা বলছেন, তাঁরা টাকা পাননি।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান বলেন, ‘মোংলা ইপিজেডের ভিআইপি নামের কারখানার শ্রমিকদের ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, নিয়মের মধ্যে থেকেই তারা কর্মী ছাঁটাই করছে। তবে শ্রমিকদের দাবি, তারা যথাযথ পাওনা বুঝে পায়নি। এটা নিয়েই অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা গেটে জড়ো হয়।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বোঝাতে চেষ্টা করি তারা যেন শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের চেষ্টা করে, কোনো বিশৃঙ্খলা যেন না হয়। কিন্তু একপর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আশপাশে ভাঙচুর শুরু করে। তখন বাধ্য হয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে পরিস্থিত পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। অধিকাংশ কর্মী চলে গেছে। অল্প কিছু দূরে এখনো অবস্থান করছে।

তবে এ বিষয়ে মোংলা ইপিজেড ও ভিআইপি লাগেজ কর্তৃপক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরি অন্যান্য নিউজ