২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি| রাত ৩:৩২| হেমন্তকাল|
শিরোনাম:
ফুলপুরে অতিরিক্ত বালু বহনকারী ট্রাক আটক, জরিমানা আদায় গফরগাঁওয়ে  সিএনজি উল্টে পুলিশ সদস্য নিহত  কুড়িগ্রামে মরিয়ম চক্ষু হাসপাতাল ও সিডিডি’র যৌথ আয়োজনে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় পাখি শিকারী আটক; জরিমানা ৫ হাজার ভারতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে নান্দাইলে বিএনপি’র বিক্ষোভ মিছিল  এসিআই ইউআইটিএস স্টুডেন্ট চ্যাপ্টারের উদ্যোগে গনিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত বেলাব ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পিঠা উৎসব গফরগাঁওয়ে গণঅধিকার পরিষদের মশাল মিছিল পাইকগাছায় বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবসের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুরু হয়েছে দুই দিনের তথ্যমেলা

শিবপুরে গুলিবিদ্ধের ৩ মাস পর উপজেলা চেয়ারম্যানের মৃত্যু, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, মে ৩১, ২০২৩,
  • 296 Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীতে বাসায় ঢুকে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত শিবপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশীদ খান (৭০) মারা গেছেন।

বুধবার বিকেল সোয়া পাঁচটায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত হারুনুর রশীদ খানের ভাতিজা ফজলে রাব্বি খান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে ভারতের দিল্লী থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসার পর হৃদরোগ, প্রস্রাবে ইনফেকশন ও শ্বাসকষ্ট শুরু হলে গত ৭ মে তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ১৯ মে রাত ১০ টার দিকে তার অবস্থার অবনতি হলে ওই হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেওয়া হয়।

এদিকে হারুনুর রশীদ খানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভূঁইয়া রাখিলের নেতৃত্বে শিবপুর সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শিবপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ গেইট বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা হারুন খানের ওপর গুলির মামলার আসামী গ্রেপ্তারে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তোলেন।

উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাতিজা ফজলে রাব্বি খান বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ওনাকে গুলি করার পর গুরুতর আহত অবস্থায় শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক মাস চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৩ এপ্রিল ভারতের দিল্লীতে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর একটি অস্ত্রোপচার শেষে ১ মে দেশে নিয়ে আসা হয়।

এরপর ৭ মে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৯ মে রাতে অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজকে (বুধবার) বিকেল ৫ টা ১৪ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

রাব্বি খান আরও বলেন, আমার বাবা সাবেক সাংসদ রবিউল আউয়াল খান কিরনকেও দুর্বৃত্তরা ১৯৮৬ সালের ২৮ এপ্রিল আওয়ামী লীগের দলীয় সমাবেশ করে ফেরার পথে গুলি করে হত্যা করেছিল। আমার চাচাকে হত্যার উদ্দেশ্যে যারা গুলি করেছে তাদের গ্রেপ্তারে কোন অগ্রগতি আমার জানা নেই। এমনকি যারা মদদ দিয়ে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারাও প্রকাশ্যে এমপির সঙ্গে মিটিং সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে বেড়াচ্ছেন। এগুলো দেখে ও শুনে কাকু (হারুনুর রশীক খান) খুব কষ্ট পেয়েছেন। আর সেই কষ্ট নিয়েই আজকে মারা গেলেন।

আহত চেয়ারম্যানের পরিবার ও পুলিশ জানায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সোয়া ছয়টার দিকে শিবপুর পৌর এলাকার বাজার সড়কে নিজের বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হন উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশিদ খান। ঘটনার পর তাকে প্রথমে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর পিঠে বিদ্ধ দুটি গুলি বের করা হয়।

এদিকে ঘটনার দিন রাতেই নরসিংদী জেলা পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে ৪ জনকে আটক করে। ঘটনার দুই দিন পর উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে মো. আমিনুর রশীদ খান তাপস বাদি হয়ে পুটিয়া এলাকার আরিফ সরকারকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ও অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে শিবপুর মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলার আসামীরা হলেন, পুটিয়া ইউনিয়নের কামারগাঁও এলাকার আরিফ সরকার (৪০), পূর্ব সৈয়দনগর এলাকার মো. মহসীন মিয়া (৪২), কামারগাও এলাকার ইরান মোল্লা (৩০), মুনসেফেরচর এলাকার শাকিল (৩৫), কামারগার এলাকার হুমায়ুন (৩২) ও নরসিংদী শহরের ভেলানগর এলাকার গাড়ি চালক নূর মোহাম্মদ (৪৮)।

আসামীরা স্থানীয় সাংসদ জহিরুল হক ভূঞা মোহন ও তাঁর ছোট ভাই জেলা যুবলীগের সহসভাপতি জোনায়েদুল হক ভূঞা জুনুর ঘনিষ্ঠ। এর পর পুলিশ এজাহার নামীয় ৬ নম্বর আসামী নরসিংদী শহরের ভেলানগর এলাকার আজগর আলীর ছেলে ড্রাইভার নূর মোহাম্মদকে (৪৮) ও ৪ নম্বর আসামী শিবপুরের পুটিয়া ইউনিয়নের মুনসেফের চর এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে শাকিলকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে।

এ ঘটনায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক লিখিত জবানবন্দি দেয় নূর মোহাম্মদ। ঘটনার পর থেকে প্রধান আসামি আরিফ সরকার, মহসীন, ইরান মোল্লা ও হুমায়ুন পলাতক রয়েছেন। তারা বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যানকে গুলির ঘটনায় গত ৭ মার্চ মো. ফরহাদ হোসেন ওরফে মোফাজ্জল হোসেন সরকার (৩৪) ও আরিফকে (২৮) মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা মতিঝিল জোনের বিশেষ টিম।

এসময় তাদের কাছ থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি রিভলবার ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশের কাছে তাদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছে। পাশাপাশি তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান আসাদের সম্পৃক্ততার তথ্য দেন।

শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানকে গুলির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরমধ্যে এজাহারনামীয় দুজন। এজাহারের নূর মোহাম্মদ নামের একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। আরেক এজাহারভুক্ত আসামী শাকিল কারাগারে রয়েছে। আর এজাহারের প্রধান আসামীসহ ৪ জন দুবাইয়ে অবস্থান করছে। তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগীতা চাওয়া হয়েছে। এই মামলাটি হত্যা মামলায় পরিণত হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরি অন্যান্য নিউজ