শেখ মানিক, শিবপুর:
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় ৫০ তম গ্রীষ্মকালীন সেমিফাইনাল ফুটবল খেলায় জয় পরাজয় নিয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে।
এতে উভয় দলের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। একজনের অবস্থা গুরুতর থাকায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আজ ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে শিবপুর উপজেলার দক্ষিণ সাধারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। পরে বিচারের আশ্বাসে ছাত্র ছাত্রীরা তালা খুলে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে বিক্ষোভ করছে।
বিদ্যালয়ের পরিবেশ থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয় লোকজন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেলে শিবপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ধানুয়া মাঠে ৫০ তম গ্রীষ্মকালীন ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা ভিত্তিক সেমি ফাইনাল ফুটবল খেলায় দক্ষিণ সাধারচর উচ্চ বিদ্যালয় ও সৈয়দনগর আতোয়ার রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খেলায় অংশ গ্রহণ করে। দুই দলের খেলা ড্র হয় । নিয়ম অনুযায়ী ট্রাইবেকারে সৈয়দনগর আতোয়ার রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খেলায় পরাজিত হয়।
পরে বিজয়ী দলের খেলোয়ারদের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে উভয় দলের ১২ জন ছাত্র আহত হয়েছে।
আহতরা হলেন দক্ষিণ সাধারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর সোলমান, ফারদিন, মাহমুদ,হৃদয়, মাহফুজ,ফাহাদ ৯ ম শ্রেণির ফুয়াদ,আসাদুল। তাঁরা খেলা শেষে নিজস্ব যানবহনে অটোরিকশার মাধ্যমে শিবপুর থেকে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সময় উপজেলার ইটাখোলা মুনসেফেরচর নামক স্থানে একটি অটো রিক্সা হঠাৎ নষ্ট হয়ে যায়। অটোরিকশায় থাকা ৮ জন শিক্ষার্থী রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে।
এমন সময় সৈয়দনগর আতোয়ার রহমান উচ্চ বিদ্যালয় এর কিছু শিক্ষার্থী সিএনজি যুগে ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের নির্ধারিত পোশাক পরিধানরত মুন্সেফেরচর স্থান নামক ব্রিজের উপরে উপস্থিত হয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এতে ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হলে তাদেরকে প্রথমে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ প্রেরণ করেন।
ফারদিন নামক এক শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য শিক্ষার্থীরা পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন।
সৈয়দনগর আতোয়ার রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবুর রহমান হামলার কথা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে তার বিদ্যালয়ে যারা জড়িত এবং অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে কমিটির সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দক্ষিণ সাধারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ মনির হোসেন জানান, হামলায় তার বিদ্যালয়ের ৮ জন ছাত্র আহত হয়েছেন। একজনের অবস্থা গুরুতর। ছাত্র ছাত্রীরা বিচারের দাবীতে সোমবার সকালে বিদ্যালয়ের গেটে তালা লাগিয়েছে। পরে আমাদের অনুরোধে তালা খুলে দিয়ে ক্লাস বর্জন করে মাঠে অবস্থান করে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
শিবপুর উপজেল মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আলতাফ হোসেন জানান, এ ব্যাপারে আমরা খোঁজ খবর নিয়েছি। ইউএনও স্যারের সাথে এব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। দুই স্কুলের কর্তৃপক্ষের সাথে বসে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিনিয়া জিন্নাত জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। ছাত্ররা যেহেতু আহত হয়েছে তাই আগামীকাল মঙ্গলবার ফাইনাল ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হবে না।