রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি:
নরসিংদীর রায়পুরার মরজালে গ্রামীণ সড়কের ইট তুলে চারা রোপণ, ঘর নির্মাণ ও প্রবেশ পথে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকার ইলিয়াস আলী ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন শতাধিক পরিবারসহ এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সড়কের দুটো প্রবেশ পথে কাটা যুক্ত বাঁশের বেড়া, নির্মিত সড়কের ইট সড়িয়ে চারা রোপন, ঘর-শৌচাগার নির্মাণসহ মানুষের চলাচল বন্ধ।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার মরজার ইউনিয়নে মরজালের বটিয়ারা গ্রামের সম্প্রতি বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প (বিআরডিবি-৩) স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ অংশীদারিত্বে নবী হোসেনের দোকান হইতে হারুন মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত ১০০ মিটার (হেরিং বোন বন্ড) সড়কটি ১ লাখ ৬১ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
এদিকে সড়কের কাজ শেষ হওয়ার এক সাপ্তাহ পর হঠাৎ লোকজন নিয়ে ৩০ মিটার অংশের ইট তুলে ফেলে দেন ইলিয়াস আলী ও তার লোকজন। ওই রাস্তাটি স্থানীয় ইলিয়াস আলীসহ তিন ব্যক্তির জমির ওপর দিয়ে রাস্তাটি নেওয়া হয়। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে রাস্তাটি দিয়ে স্থানীয়রা চলাচল করে আসছে। ইতিপূর্বে ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে ৪০ দিনের কর্মসূচির আওতায় তিনবার ওই কাচা রাস্তাটিতে মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করা হয়।
নতুন নির্মিত সড়কে দুটি প্রবেশ পথে বেড়া দিয়ে চারা রোপন, ঘর-শৌচাগার নির্মাণসহ কয়েকমাস ধরে চলাচল বন্ধ। এতে দুর্ভোগে পড়েছে শতাধিক পরিবার। ওই সড়কটি উন্মোক্ত করতে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে অবগত করেছেন মরজাল ইউপি সদস্য মো. আলতাব হোসেন ও স্থানীয়রা।
বাসিন্দা কাজী কামাল হোসেন বলেন, এই রাস্তাটা দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত লোকজন চলাচল করে আসছে। সরকারিভাবে তিনবার মাটি ফেলা হয়েছে। তিনি রাস্তাটি নির্মাণের সময়ও বাঁধা দেননি। রাস্তা হওয়ায় পর অসৎ উদ্যেশ্যে রাস্তা উঠিয়ে কাটা দিয়ে দুই পাশে বেড়া ও ঘর নির্মাণ করেছে। স্থানীয়রা এর প্রতিকার চায়।
বয়োবৃদ্ধ রেজিয়া খাতুন, সুরাইয়া, জাকির হোসেন বলেন, ’আড়াই দশক ধরে এই সড়ক দিয়ে এলাকাবাসী চলাচল করে আসছি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তিনবার ওই কাচা রাস্তাটিতে মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করে তুলে। সম্প্রতি আলতাব মেম্বার ইটের রাস্তাটি নির্মাণ করেন। হঠাৎ রাতের আঁধারে ইট তুলে ফেলে বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন ইলিয়াস। এতে দুর্ভোগে শতাধিক পরিবারের লোকজনসহ শিক্ষার্থীরা। রাস্তা উদ্ধার করে পূনরায় চালুর জোর দাবি জানাচ্ছি।
ইলিয়াস আলীর ভাতিজা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, রাস্তা নির্মাণের সময় চাচা উপস্তিত ছিলেন। ওই সময় তিনি কোন প্রকার আপত্তি জানাননি। এখন রাস্তার ইট তুলে বেড়া দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে আমরা পরিবার নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছি।
মরজাল ইউপি সদস্য মো. আলতাব হোসেন বলেন, মাটি ভরাটসহ হেরিং বোন বন্ড রাস্তা নির্মাণের এক সাপ্তাহ পর লোকজন নিয়ে ইট তুলে বেড়া দিয়েছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। শতাধিক পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন যাবত চলাচলের ওই রাস্তাটি বন্ধ। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন লোকজন। বিষয়টি যথাযত কর্তৃপক্ষ এবং উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তিনি সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন। রাস্তাটি উদ্ধার করে সংস্কারসহ জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাসহ রাস্তাটি পূনরায় স্থাপন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
রাস্তার ইট তুলে ফেলার কথা শিকার করে অভিযুক্ত ইলিয়াস আলী বলেন, আমার সাথে আলোচনা না করেই রাস্তা নির্মাণ করেন মেম্বার। শুধু আমার জমি দিয়ে রাস্তা দিবো না। পাশাপাশি দুটি জমির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হলে আপত্তি নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো আজগর হোসেন বলেন, বিষয়টি শুনেছি, কাজটি আমার তত্ত্বাবধানে নয়। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে থাকায় আমার কিছুই করার নেই। তবে এটাও শুনেছি উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সকলকে একসাথে নিয়ে বসে সমস্যার সমাধান করবে।