৩১শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি| বিকাল ৩:৩৪| শরৎকাল|

সাহেদের পরিবারের দাবি অপরাধ না করেও অপরাধী তিনি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, মে ১৫, ২০২৩,
  • 242 Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বৈশ্বিক মহামারি করোনা কালীন সময়ে দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও অন্যতম ঘটনা রিজেন্ট হাসপাতাল মালিক সাহেদের গ্রেফতার। কিন্তু সময় গড়িয়ে দেশে ঘটেছে অসংখ্য চটকদার ঘটনা। এসব ঘটনা ও অঘটনের খবরের মাঝে সেই সময়ের সর্বাধিক আলোচিত বিষয়টি যেন হারিয়ে গিয়েছে।

রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ শাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত রিপোর্টের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শাহেদের পরিবারের দাবি পুরোটাই ভিন্ন রকম। সাহেদের পরিবারের দাবি অপরাধ না করেও অপরাধী তিনি।

অভিযোগ করা হয়েছে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোহাম্মাদ শাহেদ করোনা রোগী পরীক্ষা করা বাবদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিপুল পরিমনা টাকা নিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে শাহেদ কোন টাকা নিয়েছে ওই সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা মামলার চার্জশীটে কোন কিছুই উল্লেখ নেই বরং তার উল্টো কথা বলা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, শাহেদ কোন টাকা গ্রহন করেননি। চার্জশীটে বলা হয়েছে শাহেদ একটি বিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জমা দিয়েছিলেন। খুঁজে পাওয়া গেছে শাহেদ কোন বিলও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জমা দেননি। শাহেদের স্ত্রীর নামে একটি এফডিআর রয়েছে কিন্তু জানা যায় শাহেদের স্ত্রী ওই এফডিআর এর অর্থ পেয়েছেন অনেক বছর আগে এবং তার সরকারী কর্মকর্তা বাবার কাছ থেকে, এ বিষয়ে তার ট্রাক্স ফাইলও রয়েছে।

ফাইলে যাবতীয় তথ্য উলে­খ করা হয়েছে। শাহেদের পিতা সাতক্ষিরা শহরের একজন স্বানামধন্য মানুষ ছিলেন। শহরের তাদের একাধিক বিপনী বিতান নির্মিত হয়েছে শাহেদের জন্মেরও আগে। শাহেদের পিতা তার নিজ নামে ব্যাংকে একাউন্ট খুলে অর্থ জমা রেখেছেন এবং নিজে সে ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেন। এখন পিতার ব্যাংক হিসেবের দায় ছেলের ওপর চাপিয়ে শাহেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অন্য কোন একজন লোকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা জাল টাকার দায় শাহেদের ওপর চাপিয়ে মামলা করা হয়েছে। শাহেদের বিরুদ্ধে যে অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছে ওই অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে ঢাকা শহরের জনবহুল এলাকার একটি সড়কে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে তাকা একটি গাড়ীর ছাদ থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে জনবহুল ঢাকা শহরের সড়কে পড়ে থাকা একটি গাড়ীর ছাদে কি ভাবে পনের দিন ধরে একটি অস্ত্র পড়ে থাকে। এটা কি করে সম্ভব? এমনি নানা অসঙ্গতিপূর্ন একাধিক মামলা দায়ের করে আওয়ামী পরিবারের সন্তান শাহেদের জীবনকে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তার পরিবার। সামাজিক ভাবে তাকে হেয় করতে তিলকে তাল বানিয়ে প্রচার করা হয়েছে। শাহেদের এক নিকটাত্বীয় বলেন, শাহেদের যদি অপরাধ হয়ে থাকে তা হলো বিভিন্ন টকশোতে আওয়ামীলীগের পক্ষে কথা বলা এবং বিএনপির তীব্র সমালোচনা করা এবং প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যাক্তির সঙ্গে চলাফেরা করা। এছাড়া আমি শাহেদের কোন অপরাধ দেখি না।

দেশের আলোচিত মামলাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক শাহেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা একাধিক মামলা। তবে মামলায় দায়ের করা অভিযোগ পত্রের সঙ্গে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও প্রচারের সঙ্গে বিস্তর ফারাক রয়েছে,দায়ের করা অভিযোগপত্র বিশ্লেষন করলে এমনটাই দেখা যায়। এ নিয়ে শাহেদের পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে ন্যায় বিচার পাওয়ার দাবী করা হয়েছে।

কভিড-১৯ অর্থাৎ করানোকালে বিশ্বের অন্যদেশগুলোর মতই মহাবিপর্যয়ের মুখে পড়ে বাংলাএদশ, তখোন দেশের বেসরকারী মালিকানার প্রায় সব হাসপাতাল মুখ ফিরিয়ে নেয়।কোন হাসপাতাল করোনা রোগী ভর্তি করেনি।

তবে সেই দুর্যোগের সময়ে প্রথমদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সরকারের একাধিক মন্ত্রীর মৌখিক অনুরোধে রিজেন্ট হাসপাতাল সরকারকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে। রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় করোনা রোগী রাখার সিদ্ধান্ত হয় এবং রিজেন্ট হাসপাতালই প্রথম করোনা রোগী ভর্তি করে। ২১/৩/২০২০ তারিখে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো.শাহেদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচক আবুল কালাম আজাদের মধ্যে লিখিত চুক্তি হয়। সে চুক্তি বলেই রিজেন্ট হাসপাতাল করোনা রোগী গ্রহন করে। ওই সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বলা হয় পরবর্তী যে কোন সময়ে হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করে নিতে। সে অনুসারে হাসপাতাল কতৃপক্ষ লাইসেন্স নবায়ন করতে সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দেন। উলে­খ্য লাইসেন্স নবায়ন বিহীন অবস্থায়ই স্বাস্থ্য অধিপ্তর রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে লিখিত চুক্তি করে এবং করোনা রোগীর চিকিৎসা শুরু হয়।

পরবর্তীতে রিজেনট হাসপাতালের মালিক শাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বলা হয় তিনি করোনা রোগীর ভুয়া টেস্ট রিপোর্টে দিয়েছেন এবং রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। ভ‚য়া টেস্ট রিপোর্ট হিসেবে দশজন রোগীর নাম মামলার অভিযোগ পত্রে উলে­খ করা হয় তবে যে দশজনের নাম উলে­খ করা হয়েছে তাদের সবার রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে নিপসনের মেসেজ থেকে । নিপসনের ওয়েবসাইট ঘেটে দেখা যায় রিপোর্টগুলো রয়েছে। এ ক্ষেত্রে শাহেদেরে বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগটি সম্পূর্ন মিথ্যা তার প্রমান সরকারী ওয়েব সাইট।

করোনা পরীক্ষা করার জন্য শাহেদ কোন রোগীর কাছ থেকে অর্থ নিয়েছে এমন অভিযোগ কোন ব্যাক্তি করেনি এবং মামলার অভিযোগ পত্রে ও এমন কোন লোকের কথা উলে­খ নেই। এছাড়া সে সময়ে মনগড়া প্রচার করা হয় মোহাম্মাদ শাহেদ করোনা পরীক্ষার জন্য সরকারী কোষাগার থেকে প্রচুর টাকা নিয়েছেন,বাস্তবতা হলো রিজেন্ট হাসপাতাল করোনার জন্য সরকার থেকে একটি টাকাও গ্রহন করেননি। তিনি টাকা নিয়েছেন এমন কথা মামলার অভিযোগ পত্রেও বলা হয়নি। মামলার চার্জশীটে বলা হয়েছে মোহাম্মাদ শাহেদ কোন টাকা নেননি তবে এক কোটি ছিয়ানব্বই লাখ কুড়ি হাজার টাকার একটি বিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছিলেন। বাস্তবে সেটাও সত্য নয়। স্বাস্খ্য বিভাগে কোন বিলও রিজেন্ট হাসপাতাল পাঠায়নি।

মোহাম্মদ শাহেদ যদি দোষ করে থাকেন তা হলে সেটা হচ্ছে করোনা রোগীদের আশ্রয় দিয়ে,সে বিষয়ে তার বিচার হতে পারে কিন্ত তার নামে রড সিমেন্ট বাকী নেওয়ার মামলাও দেয়া হয়েছ যার সিংহভাগ পাওনা তিনি পরিশোধ করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরি অন্যান্য নিউজ