২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি| রাত ১:০৪| শীতকাল|

৩৭৭ ভোট পাওয়া সেই ভিক্ষুক এবার এমপি প্রার্থী হবেন

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, আগস্ট ১৩, ২০২৩,
  • 211 Time View

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

গত ইউপি নির্বাচনে ৩৭৭ ভোট পাওয়া ত্রিশালের আলোচিত সেই ‘ভিক্ষুক চেয়ারম্যান’ প্রার্থী এবার এমপি প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে তার পক্ষে পোস্টার সাঁটানো হচ্ছে।

এ পোস্টার গুলো সে নিজেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে সাঁটাচ্ছেন। গত ছয়দিন ধরে হাজার খানেক পোস্টার তিনি উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এর সত্যতাও পাওয়া যায়।

এক হাতে পোস্টারের ব্যাগ আরেক হাতে আঠার বালতি নিয়ে এলাকার বিভিন্ন স্থানে একাই নিজের পোস্টার নিজেই সাঁটাচ্ছেন তিনি। এ কাজে আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছেন স্থানীয় কিছু বাসিন্দার।

তিনি অন্যের সহযোগিতায় চলায় নিজের নামের শেষে উপাধি লাগিয়েছেন ‘ফকির’। ভাসমান জীবনযাপন করা মো. আবুল মুনসুর ফকির বৈলর ইউনিয়নের বড় পুকুরপাড়ের বাসিন্দা। মানুষের দানে চলে তাঁর জীবন। এ অবস্থায় ভেবেছেন জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের সেবা করবেন।

উল্লেখ্য, গত ইউপি নির্বাচনে ত্রিশালের আলোচিত এই ‘ভিক্ষুক চেয়ারম্যান’ প্রার্থীকে ভোট দিয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নির্বাচনে অর্থের প্রভাবের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছিল ৩৭৭ জন ভোটার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থী বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে নির্বাচনকে সামনে রেখে। সেখানে অসহায় এই প্রার্থী কোনো টাকা খরচ না করেই গত ইউপি নির্বাচনে পেয়েছিল ৩৭৭ ভোট। অংশগ্রহণকারী আরও কয়েকজন প্রার্থী তাঁর চেয়ে কম ভোট পেয়েছিল।

গতবারের মতো এবারও ভোর থেকে রাত পর্যন্ত পাড়া মহল্লা, হাট-বাজারে একাই পোস্টার সেঁটে সামনের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি পদে প্রার্থী হওয়ার জানান দিচ্ছেন আবুল মুনসুর ফকির। গত নির্বাচনে ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। প্রতীক ছিল চশমা। তখন এটাকে পাগলামি ভেবে নিজের সন্তান ও আত্মীয়রাও ছিলেন দূরে।

এবার এমপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টিকেও অনেকেই যেখানে পাগলামি বলছে, সেখানে আবার স্থানীয় অনেক বাসিন্দা এটাকে নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ হিসেবে মনে করছেন এবং তাকে উৎসাহ দিচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, তিনি একটি কার্ডের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলেন। তাঁকে কার্ড করে না দেওয়ায় তখনই উনি নিয়ত করেছিলেন, জনপ্রতিনিধি হবেন। এরপর থেকেই তিনি তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী মো. আবুল মুনসুর ফকির বলেন, ‘আমার মতো অসহায় মানুষের ডাকে সাড়া দিয়ে যাঁরা পাশে থাকছেন, তাঁদের কথা আমি সারাজীবন মনে রাখব। জনগণকে কিছু দিতে বা করতে না পারলেও অবৈধভাবে টাকা উপার্জন করা যে পাপ, তা আমি এভাবে বলে যাব সব সময়। আর যদি আপনারা আমাকে এমপি বানান তাহলে সরকারি সব মালামাল যে পাওয়ার যোগ্য তার হাতে তুলে দেবো। কোনো গরিবই আর সরকারি সুযোগ-সুবিধার বাইরে থাকবে না।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরি অন্যান্য নিউজ