
ময়মনসিংহের ফুলপুরে সরকারী চাউল নিজ বসত-ঘরে রাখার অভিযোগ ও লুটপাট করার অপরাধে মামলা করায় বাদী ও তাঁর পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় মামলার বাদী ও তাঁর পরিবার নিজ বাড়িতে না আসতে পারায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে মামলার বাদী নিজ এলাকা ছাড়া হলেও মামলার প্রধান আসামি নিজ বাড়িতেই রয়েছে।
অপরদিকে মামলার ১০ জন আসামীর মাঝে ৯ জন কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে প্রধান আসামীর সহযোগীতায় মামলার বাদীকে হত্যার হুমকিসহ নিজ বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে এলাকায় চলছে টানটান উক্তেজনা। যে কোন দু‘দলের সংঘাত এলাকায় তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।
ফুলপুর থানা ও ভূক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা যায়, ফুলপুর উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের দ্বারাকপুর গ্রামের আবুবক্কর সিদ্দিকের ছেলে শফিকুল ইসলামের নিজ বসতঘরে সরকারী চাউল মজুদ রাখার তথ্য পায় স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ফুলপুর উপজেলা প্রশাসনকে মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেন এলাকার লোকজন।
ফুলপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরেজমিনে শফিকুলের বসত ঘরে তল্লাশি চালিয়ে সরকারী চাল না পেয়ে চলে আসেন।
এদিকে সরকারী চাল শফিকুলের বসত ঘর থেকে তাৎক্ষণিক সরিয়ে ফেলা হয় বলে জানান স্থানীয়রা। এ সময় সরকারী চাউল সরানোর একটি ভিডিও করে রাখেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, প্রশাসনকে জানানোর অপরাধে স্থানীয় আব্দুল মোমিন মানিক, খলিরুর রহমান, আল-আমিন, বিল্লাল হোসেন, শফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন দূর্বৃত্ত স্থানীয় সেকান্দর আলী ও তাঁর স্ত্রী হাসিনা খাতুনসহ পরিবারের ৪-৫ জনের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুরততর হামলা করেন।
এ ঘটনায় গুরতর আহত সেকান্দরসহ কয়েকজনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সেকান্দর বাড়িতে প্রবেশ করার সময় আবারও হামলা করা হয়।
এ ঘটনায় গত ২৬ (অক্টোবর) রবিবার ফুলপুর থানায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুরতর আহত সেকান্দর আলীর স্ত্রী হাসিনা খাতুন ফুলপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় দ্বারাকপুর গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে আব্দুল মোমেন মানিকসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়।
সম্প্রতি মামলায় ৯ জন আসামি জামিনে বের হয়ে নিজ এলাকায় রয়েছে। মামলার বাদির অভিযোগ প্রধান আসামি আব্দুল মোমেন মানিককে এখনো গ্রেপ্তার করতে না পারায় জামিনে থাকা আসামিদের নিয়ে বাদিকে হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া অভিযোগকারী হাসিনা খাতুন বলেন, প্রধান আসামি প্রভাবশালী হওয়া পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছেন না। স্থানীয়রা জানান, অভিযোগ সরকারী চাউলসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। এলাকায় প্রভাবশালী হওয়া পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারছেন না।
মামলার বাদী হাসিনা খাতুন বলেন, শফিকুল ইসলামের বসত ঘরে চাউল ও আমাদেরকে দেশীয় অস্ত্রসহ হামলার ভিডিও আমাদের সংরক্ষণে রয়েছে। সমস্থ প্রমাণ আমরা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানানোর পরেও মামলার প্রধান আসামী গ্রেপ্তার না হওয়া আমি ও পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
এ বিষয়ে মামলায় আসামী হওয়া আব্দুল মোমিন মানিকের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
ফুলপুর থানার ওসি আব্দুল হাদি বলেন, মামলায় ৯ জন আসামি জামিনের পর এলাকায় রয়েছে। প্রধান আসামিকে ধরার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। বাদীকে হত্যার হুমকির বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।